কুষ্টিয়ায় রেকর্ড শনাক্তের দিনে মৃত্যু ৪ জনের
প্রকাশিত : ১৪:৩৩, ১৮ জুন ২০২১
কুষ্টিয়ায় দ্রুত বদলে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের দৃশ্যপট। ভারত সীমান্ত ঘেঁষা এ জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রোগী শনাক্তের সংখ্যা দেড়শ-এর কোঠা পেরিয়েছে। এদিন নতুন করে আরও ১৫৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এসময়ে মারা গেছে ৪ জন।
এদিন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে মোট ৩৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৫৬টি নমুনা পজিটিভ আসে। পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের হার প্রায় ৪০ শতাংশ। আগের দিন অর্থাৎ বুধবার সদর উপজেলায় রোগী শনাক্তের সংখ্যা এক লাফে অনেকটা কমলেও গতকাল তা সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি কুমারখালী উপজেলাতেও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে শনাক্তের হার।
নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর মধ্যে- সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৭৭ জন, কুমারখালী উপজেলায় ২৮ জন, মিরপুর উপজেলায় ১৯ জন, দৌলতপুরে ১৭ জন, খোকসা উপজেলায় ৫ জন ও ভেড়ামারা উপজেলায় ১০ জন শনাক্ত হয়েছে। এদিন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ জন।
এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬ হাজার ৬৩ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ হাজার ৯৪৭ জন মানুষ এবং এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪০ জন।
ঈদের পর থেকে কুষ্টিয়ায় উদ্বেগজনকহারে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। গত ১০ দিনে জেলায় ২৫৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। অধিকাংশ রোগী কুষ্টিয়া শহরকেন্দ্রিক। করোনা চিকিৎসার একমাত্র প্রতিষ্ঠান ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
গত শনিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য প্রশাসন কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দেয়। শুক্রবার (১৮ জুন) মধ্যরাত শেষ হচ্ছে বিধিনিষেধের সেই সময়। এর মধ্যেও জেলায় করোনা সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়ে চলেছে। তবে বিধিনিষেধের শর্তগুলো কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ ছিল। মাঠ পর্যায়ে তা খুব একটা বাস্তবায়ন হয়নি। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছে সচেতন মহল।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বারবার জেলায় সম্পূর্ণ লকডাউনের পরামর্শ দিলেও জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন করোনা প্রতিরোধ কমিটি তা আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার মাঠে বিধিনিষেধ তথা স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরে প্রশাসনকে তেমন তৎপর হতেও দেখা যায়নি। দুই-একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, শহরের প্রবেশমুখে কিছু গাড়ি আটকে দেওয়া ছাড়া আর কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি। এ কারণেই করোনা দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্থানীয় মহল।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জানান, সবার সাথে আলোচনা করে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে জেলায় কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করা হতে পারে।
এনএস/
আরও পড়ুন