চট্টগ্রামে গার্মেন্টসকর্মীকে দফায় দফায় গণধর্ষণ, আটক ৬
প্রকাশিত : ১০:৩৯, ২৬ জুন ২০২১
চট্টগ্রাম নগরীতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করা হয়েছে এক গার্মেন্টসকর্মীকে। পরবর্তীতে আরও তিনবার গণধর্ষণের শিকার হন ওই নারী। এ ঘটনায় মিরসরাই থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (২৫ জুন) রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলো- সীতাকুণ্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকার মো. দুলালের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৩), বাঁশবাড়ীয়া এলাকার মো. ইয়াছিনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (১৮), মুরাদপুর এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে রায়হান উদ্দিন রানা (২০), উত্তর ইদিলপুর এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২৩), শীবপুর এলাকার মো. সালামত উল্লাহর ছেলে মো. ইসমাঈল (৩২), মিরসরাই উপজেলার মধ্যম কুরুয়া এলাকার মো. জেবল হোসেনের ছেলে মো. সাগর (২২)।
মিরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, গত ২৩ জুন সন্ধ্যা ৬টায় ভিকটিম পোশাককর্মীকে (২২) তার পরিচিত সীতাকুণ্ডের চাকা পরিবহনের বাসচালক আশরাফুল ইসলাম (২৩) প্রকাশ আল আমিন চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার আসার জন্য বলেন। সেখান থেকে তাকে আল আমিন বাসে করে সীতাকুণ্ড নিয়ে আসেন।
এ সময় সীতাকুণ্ডে বাস থেকে সব যাত্রী নামিয়ে দিলেও ভিকটিমকে তারা নামতে দেয়নি। আল আমিন ও তার সহকারী (হেলপার) শাহাদাৎ তাকে সীতাকুণ্ডের জুটমিল এলাকায় নিয়ে বাসের মধ্যে ধর্ষণ করে।
পরবর্তীতে তারা ভিকটিমকে জুটমিল এলাকায় বাস থেকে নামিয়ে রেখে চলে যায়। পরে ভিকটিম তার পূর্ব পরিচিত রায়হান উদ্দিন রানাকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। রানা তাকে সীতাকুণ্ড আসার জন্য বলে। ভিকটিম সীতাকুণ্ড আসার জন্য বাসে উঠলে ওই বাসের ড্রাইভার ইসমাঈল ও তার সহকারী (অজ্ঞাত) রাত প্রায় সাড়ে ১১টায় ওই বাসে তাকে আবার ধর্ষণ করে সীতাকুণ্ড নামিয়ে রেখে চলে যায়।
পরবর্তীতে রায়হান উদ্দিন রানা সীতাকুণ্ড এসে ভিকটিমের সাথে দেখা করে তার বন্ধু সাগর ও বেলালসহ তাকে সীতাকুণ্ড থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৪টায় মিরসরাইয়ের সাহেরখালী এলাকার বেঁডিবাধে নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিমকে পুন:রায় ধর্ষণ করেন সাগর, বেলালসহ আরও কয়েকজন।
পরবর্তীতে রানা ও তার সহপাঠিরা ভিকটিমের কাছে থাকা নগদ ২ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে তাকে রেখে পালিয়ে যায়। ভিকটিম বৃহস্পতিবার সকালে বেঁড়িবাধ এলাকা থেকে মিরসরাইয়ের নিজামপুর এলাকায় আসে। পরবর্তীতে বাসে করে সীতাকুণ্ড থানায় গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধর্ষণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়। তবে গণধর্ষণের সর্বশেষ ঘটনা মিরসরাই থানা এলাকায় হওয়ায় সীতাকুণ্ড থানা অভিযোগটি মিরসরাই থানায় হস্তান্তর করে।
পরিদর্শক কামাল হোসেন আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মিরসরাই থানায় গণধর্ষণের বিষয়ে মামলা করেন ভিকটিম। পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সীতাকুণ্ড উপজেলার জোড়াআমতলা, কুমিরা, সীতাকুণ্ড পৌরসভা ও মিরসরাইয়ের নিজামপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ আসামিকে আটক করে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় মিরসরাই থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করেছে।
আসামিদের আটকের বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই) সার্কেল, সহকারী পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড) সার্কেল, মিরসরাই থানা ও সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ ওই যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এনএস/
আরও পড়ুন