মিরসরাইয়ে ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশি, শনাক্ত ঊর্ধ্বমুখী
প্রকাশিত : ১১:৩৪, ৪ জুলাই ২০২১
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় জ্বরের প্রাদুর্ভাব আরও বেড়েছে। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভার প্রায় প্রতিটি ঘরেই জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত এমন মানুষ পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। জ্বরের রোগী আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় এলাকায় করোনাভীতি ছড়িয়ে পড়ছে।
সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা রোগীর সংখ্যাও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এছাড়া করোনা শনাক্তের ভয়ে অনেকেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বাড়িতেই গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ আজ রোববার (৪ জুলাই) ১৯ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে এ উপজেলায় করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১৪৪ জন। তবে নমুনা দিতে মানুষের অনীহা থাকায় উপজেলায় করোনা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে পারছে না স্বাস্থ্য বিভাগ।
১১নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের তিনঘোরিয়াটোলার বাসিন্দা মোঃ আলমগীর আলম বলেন, আমি ৪-৫ দিন জ্বর ও সর্দিতে ভুগেছি। এ কয়েকদিনেই জ্বরে কাহিল হয়ে পড়েছি। তবে চিকিৎসা নিয়েছি বাড়িতে থেকেই, এখন ভালো আছি।
বারইয়ারহাট ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কর্মকর্তা বলেন, এখানে একজন ডাক্তারকে দেখাতে ২০ জন রোগী আসলে তার মধ্যে ১৮ জনই জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। প্রতিদিন এই ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
ওয়াহেদপুর এলাকার পল্লী চিকিৎসক লিটন চন্দ্র নাথ বলেন, এ ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি রোগী দেখতে দেখতে কাহিল হয়ে যাচ্ছি। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে জ্বর, কাশি, গলাব্যাথার রোগী রয়েছে।
গত কয়েকদিন পূর্বে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন উপজেলা খৈয়াছড়া ইউনিয়নের মসজিদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ সেলিম উদ্দিন (৫০)। এক সপ্তাহ জ্বরে ভুগে তিনি মারা যান।
মিরসরাই (সদর) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমরান উদ্দিন বলেন, ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ জ্বরে ভুগছেন। এখানে প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। আমি ইউনিয়নবাসীকে অনুরোধ করবো করোনার ভয়াবহ বিস্তার বেড়ে যাওয়ায় সরকার কঠোর লকডাউন দিয়েছে। সকলে যেন এ নির্দেশনা মেনে চলেন এবং খুব বেশি জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হবেন না।
মিরসরাই উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান একুশে টিভির অনলাইনকে জানান, উপজেলাজুড়ে জ্বরের রোগী অনেক বেড়ে গেছে। তবে জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের করোনা হয়েছে এমনটা ভাবা যাবে না। যদি জ্বর, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও মুখে স্বাদ এবং নাকে ঘ্রাণ না পায় তাহলে করোনার নমুনা দিতে হবে।
উপজেলায় হঠাৎ করে করোনা প্রকোপ বেড়ে গেছে। কারণ এলাকার জনসাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান তিনি।
এএইচ/
আরও পড়ুন