বাঁশের ভেলায় ভাসিয়ে কবরস্থানে নেয়া হলো লাশ!
প্রকাশিত : ১০:৪৭, ২২ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১১:৪৯, ২২ জুলাই ২০২১
লাশ বাঁশের ভেলায় ভাসিয়ে কবরস্থানে নেয়ার সেই দৃশ্য
সড়ক না থাকায় চিংড়ি ঘেরের পানিতে বাঁশের ভেলায় ভাসিয়ে কবরস্থানে নেয়া হলো এক বৃদ্ধার লাশ। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উপকূলীয় উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ারচর গ্রামে!
গত ২০ জুলাই রাতে ওই গ্রামের গোলাম শরীফের স্ত্রী দিলোয়ারা বেগম (৭০) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। গত ২১ জুলাই বিকেলে লাশ ভাসিয়ে নেয়ার এ ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা।
২১ জুলাই ঈদুল আযহার দিন সকাল ৭টার দিকে গোলাম শরীফের বাড়ি থেকে একটি চিংড়ি ঘেরের পানিতে বাঁশের ভেলায় ভাসিয়ে মরদেহ দাফনের জন্য ওই ইউনিয়নের নতুন ঘোনা গ্রামের আজিজিয়া জামে মসজিদের মাঠে নেয়া হয়। ওই দৃশ্যের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে ওই ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিধের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা।
মৃতের কয়েকজন আত্মীয় স্বজন জানান, মৃতদেহটি কবরস্থান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য যে সড়কটি রয়েছে তা খুবই খারাপ। মৃতদেহ বহনকারী খাটিয়া নিয়ে ওই সড়ক দিয়ে যাওয়া বড়ই দুস্কর। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই একটি বাঁশের ভেলায় মৃতদেহ বহনকারী খাটিয়ে রেখে ভাসিয়ে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শুধু লাশ দাফন নয়, গ্রামের লোকজনের যাতায়াতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় ওই সড়ক দিয়ে। উজানটিয়া ইউনিনের পেকুয়ারচর গ্রামের ফোরকানের দোকান থেকে আজিজিয়া জামে মসজিদ পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়কটি বিগত ২০ বছরেও সংস্কার করা হয়নি।
তবে স্থানীয়দের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: শাহা জামাল। তিনি বলেন, ২০ বছর ধরে সড়ক সংস্কার হয়নি এ অভিযোগ সঠিক নয়।
তিনি জানান, তার ওয়ার্ড়ের ফোরকানের দোকান থেকে আজিজিয়া জামে মসজিদ পর্যন্ত ১০/১২ চেইন সড়কের মধ্যে প্রায় ৩/৪ চেইন সড়কের অবস্থা খারাপ। তাই ওই লাশ পানিতে ভাসিয়ে কবরস্থানে নিয়েছে মৃতের স্বজনরা।
শাহা জামাল বলেন, সড়কটি সংস্কার করলেও এক বছরও টেকেনা। দুই পাশের চিংড়ি ঘেরের কারণে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে সড়কটি ভেঙ্গে যায়। তিনি এ জন্য সড়কের দুই পাশের চিংড়ি ঘেরের মালিকদের দায়ী করেছেন। ইউপি সদস্য আরও বলেন, ওই সড়কটি সংস্কারের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় প্রকল্পভূক্ত করা হয়েছে।
উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তাঁর ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগ মোটামুটি ভালো। ভেলায় ভাসিয়ে লাশ কবরস্থানে নেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সড়কটি সংস্কার করার জন্য দুই পাশের জমির মালিকরা মাটি দিতে চায় না। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে অপরিকল্পিত বাড়ী ঘর ও চিংড়ি ঘেরের কারণে সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়। তিনিও এ জন্য চিংড়ি ঘেরের মালিকদের দায়ী করেন।
এনএস//
আরও পড়ুন