আজ সোহাগপুর গণহত্যা দিবস
প্রকাশিত : ০৯:৩২, ২৫ জুলাই ২০২১
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২৫ জুলাই নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাঁকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা এদিন ভারত সীমান্তঘেঁষা এ গ্রামের সব পুরুষ মানুষকে হত্যা করে। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে গ্রামের ১৮৭ জন পুরুষকে হত্যা করা হয়। সেই থেকে সোহাগপুর গ্রামের নাম হয় বিধবা পল্লী।
বৃহত্তর ময়মনসিংহের তৎকালীন আলবদর কমান্ডার জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানরে নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল ’৭১-এর ২৫ জুলাই সকাল ৭টায় সোহাগপুর গ্রাম ঘিরে ফেলে। তারা এ সময় গ্রামের পুরুষ মানুষ যাকে যেখানে পেয়েছে, তাকেই গুলি ও ব্রাশফায়ার করে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। গ্রামের কিশোরী ও গৃহবধূদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেলেনা পারভীন জানান, এ দিবসটি উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন ও সোহাগপুর বিধবা পল্লী শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ২৫ জুলাই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ওই এলাকার এমপি হয়ে সর্বপ্রথম সোহাগপুরের বিধবাদের জনসমক্ষে আনেন। তার চেষ্টায় সেনাবাহিনী, ট্রাস্ট ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক বিধবাদের মাসিক অর্থ সহায়তা দেওয়া শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে জীবিত ২৯ বিধবাকে ১১ লাখ টাকা মূল্যের একটি করে পাকা বাড়ি উপহার দিয়েছেন। ১৪ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বিধবাপল্লীতে পাকা সড়ক হয়েছে। কাঁকরকান্দির বুরয়াজানি গ্রামে শহীদদের স্মরণে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় করে দিয়েছেন মতিয়া চৌধুরী।
এছাড়া দীর্ঘ ৪৯ বছর পর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার জন্য জেলা পুলিশ বিভাগের সদস্যরা তাদের বেতনের টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করে দিয়েছেন।
বিধবা হাফিজা বেওয়া বলেন, ‘স্বামী-স্বজনগরে মাইরা হালানির (মেরে ফেলার) পরে আমরা ভিক্ষা কইরাও খাইছি। শেখ হাসিনা, মতিয়া চৌধুরী আমগরে লাইগা অনেক করছে। মুক্তিযোদ্ধার পদবি পাইছি। ভাতা পাইতাছি। পাক্কাঘরে শান্তিতে ঘুমাইতাছি। আমগরে চাওয়া-পাওয়ার আর কিছু নাই। শুধু দুয়া করি হাসিনারে আল্লাহ-মাবুদ তারে বাঁচায়া রাখুক।’
এএইচ/
আরও পড়ুন