ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

স্ত্রীর প্রতি সন্দেহে শিশু সায়মনকে হত্যা 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৩১, ২৬ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ০৮:৩৫, ২৬ জুলাই ২০২১

পিতা বাদল মিয়ার হাতেই খুন হয়েছে ৯ বছরের শিশু সায়মন। গতকাল রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে শিশু সায়মনকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন বাদল মিয়া।

এর আগে বাদল মিয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলামের কাছে শিশু পুত্রকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৫১ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন।

শিশুপুত্র সায়মনকে হত্যাকারী বাদল মিয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের নদ্দাপাড়ার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। বাদল মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে সায়মন বড়। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র। 

আদালতের বরাত দিয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরানুল ইসলাম বলেন, সন্দেহের বশীভূত হয়ে বাদল মিয়া তার ছেলেকে খুন করেছে। গত শনিবার সকালে বাদল মিয়া তার ছেলে সায়মনকে নিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে জমিতে ঘাস কাটতে যায়। এ সময় সে সায়মনকে গলা কেটে হত্যা করে তার লাশ ধানি জমিতে ফেলে দেয়। 

পরে সকালে বাদল মিয়া বাড়িতে এসে শিশু সায়মনকে খোঁজাখুজি শুরু করে। এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বাড়ি থেকে আধা কিলেমিটার দূরে ধানি জমিতে থেকে গলাকাটা অবস্থায় শিশু সায়মনের মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ শিশু সায়মনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু সায়মনের বাবা বাদল মিয়াকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

ওসি এমরানুল ইসলাম আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বাদল মিয়া জানিয়েছে দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থেকে ২০১২ সালে সে দেশে ফিরে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের দেওয়ান পাড়ায় বিয়ে করেন। বিয়ের ৫ মাস পর তিনি পুনরায় সৌদি আরবে চলে যান। সেখানে যাওয়ার দুই মাস পর সায়মনের জন্ম হয়। এতে তার মনে সন্দেহ হয় এই ছেলে তার কিনা। ৭ মাসে কোন শিশুর জন্ম হয় কিনা। এসব সন্দেহ তার মনে দানা পাকাতে থাকে।

এক বছর পর বাদল মিয়া আবারও দেশে ফিরে আসেন। পরে সে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বিয়ের আগে তার স্ত্রীর সাথে বশির নামে এক ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিলো। বাদল মিয়ার সন্দেহ হয় সায়মন বশীরের সন্তান। বিয়ের সময় তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলো। সায়মনের পরে আয়মন ও নাঈম নামে তার আরও দুই ছেলের জন্ম হয়। কিন্তু সেই দুই ছেলের সাথে সায়মনের চেহারার কোন মিল নেই। এছাড়া সায়মন ছিলো একটু বেপরোয়া। সে প্রায়ই তার দুই ছেলেকে মারধোর করতো। গত শুক্রবারও সে তার ছোট ছেলে নাঈমকে মারধোর করে।

দুই ছেলের সাথে সায়মনের চেহারার মিল না থাকায় বাদল মিয়ার সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। এসব সন্দেহের কারণে সে সায়মনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার ভোরবেলা সে সায়মনকে ঘুম থেকে তুলে তার সাথে ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে সে শিশু সায়মনকে গলাকেটে হত্যা করে লাশ ধানি জমিতে ফেলে দেয়। 

ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, জবানবন্দী দেওয়ার পর আদালতের নির্দেশে বাদল মিয়াকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি