ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

লোহাগাড়ায় করোনায় মৃত সৌদি প্রবাসীর দাফনে কোয়ান্টাম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:১৭, ১ আগস্ট ২০২১

Ekushey Television Ltd.

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ইউনিয়নে ১ আগস্ট করোনায় মৃত প্রবাসী বাঙালি মো. জসিম উদ্দীনের (৪৮) কাফন ও দাফনের কাজ সম্পন্ন করল কোয়ান্টাম। গতকাল (৩১ জুলাই) রাত নয়টায় মো. জসিম উদ্দীন চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ ও নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ২০ জুলাই তিনি জ্বরের কারণে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। 

প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোয়ান্টামকে দাফনের কাজ স¤পন্ন করার জন্যে আহ্বান জানান লোহাগাড়া সদর ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাফর আহমেদ। পরদিন ভোরবেলা (১ আগস্ট) মৃতের নিজ গ্রাম লোহাগাড়া ইউনিয়নের খান মোহাম্মদ শিকদার পাড়ায় কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা দাফন কার্যক্রমের স্বেচ্ছাসেবীরা পৌঁছে যান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূর্ণ ধর্মীয় মর্যাদায় শেষ বিদায়ের গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনেও অংশ নেন তারা। 

স্বেচ্ছাসেবী দলটির একজন সদস্য মাওলানা আশরাফ আমিন। তিনি সাতকানিয়ার ছিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক। কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা দাফন কার্যক্রমের সাথে তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন মৃতের দাফন করা আমাদের মানবিক দায়িত্ববোধের মধ্যেই পড়ে। শুধু দায়িত্ববোধ বলব না, এই কাজ অত্যন্ত সোয়াবের। তাই এই সেবা দিতে পারছি বলে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আর আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাফন-দাফনের কাজ করি। ভয়ের আসলে কিছু নেই।’

কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা দাফন কার্যক্রমে রয়েছে বিভিন্ন বয়সের শ্রেণি-পেশার স্বেচ্ছাসেবীরা। লোহাগাড়ার আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল খালেক করোনাকালে এই দাফন কাজের একজন একনিষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবী। তিনি বলেন, ‘আমরা যে কেউ যে-কোনো সময় মারা যেতে পারি। আর সেসময় যদি নিকট আÍীয় আমার পাশে না থাকে সেটা আমার জন্যে খুবই দুঃখজনক হবে। তাই আমি সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই এ কাজে যুক্ত হয়েছি।’

ব্যক্তিগত জীবনে মৃত জসিম উদ্দীন লোহাগাড়ার হোমিও চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কামাল উদ্দীনের ছোট ভাই। ডা. কামাল উদ্দীন বলেন, ‘২৫ বছর ধরে সৌদি আরবে কাজ করেছেন আমার ভাই। চার মাস আগে তিনি দেশে আসেন। কিছুদিন পরেই তার সৌদি আরবে ফেরত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন তিনি না ফেরার দেশে! মৃত্যুকালে তিনি তার স্ত্রীসহ দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। আমাদের পুরো পরিবার শোকাহত। আর এই করোনার সময়ে আমার ভাইয়ের দাফনে কোয়ান্টাম যেভাবে সাহায্য করল, তাদের ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা আমাদের নেই। সারা দেশে তাদের এই স্বেচ্ছা কার্যক্রম আরো এগিয়ে যাক।’ 

উল্লেখ্য, করোনায় মৃতদেহ দাফন বা সৎকারে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় রয়েছে দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবী। রাজধানীসহ সারা দেশেই মমতার পরশে অন্তিম বিদায়ে চলছে তাদের নিরলস মানবিক এ সেবা কার্যক্রম। ২০২০ সালে করোনার শুরু থেকে গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৭টি মরদেহের স্ব স্ব ধর্মীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি