ঢাকা, সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাগেরহাটে পাওয়া গেল বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির রাজকাঁকড়া  

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:৫৩, ৪ আগস্ট ২০২১

বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির রাজকাঁকড়া

বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির রাজকাঁকড়া

বাগেরহাটের রামপালে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির রাজকাঁকড়া পাওয়া গেছে। রামপাল উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের আমানুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির মৎস্য ঘেরে এই কাঁকড়াটি পাওয়া যায়। কাঁকড়াটি জোয়ারের পানিতে সাগর থেকে বেসে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংকটাপন্ন প্রজাতির এই কাঁকড়াটিকে ফরমালিন দিয়ে বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল।

অশ্বক্ষুরের ন্যায় দেখতে উপবৃত্তাকার এই কাঁকড়াটির ইংরেজী নাম Mangrove Horseshoe crab। এর বৈজ্ঞানিক নাম
Carcinoscorpius rotundicauda। এটি রাজ কাকড়া হিসেবে অধিক পরিচিত। এটিকে কাঁকড়া বলা হলেও প্রজাতিগত দিক থেকে মাকড়সার সঙ্গে বেশি মিল রয়েছে এটির। এরা লিমুলিডি গোত্রের অন্তর্গত সামুদ্রিক সন্ধিপদী প্রাণি। এরা প্রধানত অগভীর সমুদ্র ও নরম বালি বা কাদা সমৃদ্ধ সমুদ্রতলে বাস করে। কালেভদ্রে যৌনসঙ্গমের জন্য এদের ডাঙায় আসতে দেখা যায়। জন্মের সময় সাত থেকে আট সেন্টিমিটার এই প্রাণিটি প্রায় ৮ বছর কাদা মাটি বা নরম বালুর নিচে থাকে। ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা হলে তারা অগভীর সমুদ্রে চলে যায়। পরিপক্ক অবস্থায় এটি ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর মাথায় একটি সুরের মত রয়েছে। এর খোলস বেশ শক্ত। এটি সার তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হত এক সময়। এই কাঁকড়ার নীল রক্ত বহুমূল্যবান। এই রক্তের অসাধারণ ক্ষমতা বলে লিমিউলাস বা অশ্বক্ষুরাকৃতি কাঁকড়ারা যে কোনও ধরণের ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানে এদের গুরুত্ব অপরিসীম। 
 
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, রাজ কাকড়া সাধারণত আমাদের এলাকায় পাওয়া যায় না। কালেভদ্রে যৌনসঙ্গমের জন্য সমুদ্র থেকে এদের ডাঙায় আসতে দেখা যায়। কিন্তু ৩১ আগস্ট রামপাল উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের আমানুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির মৎস্য ঘেরে এই কাঁকড়াটি পাওয়া যায়। পরবর্তীতে আমরা কাঁকড়াটিকে সংগ্রহ করি। এটি এখন মৃত প্রায় অবস্থায় রয়েছে। এটি মারা গেলে আমরা ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখব। ধারণা করছি, কাঁকড়াটি সমুদ্র থেকে জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, এই কাঁকড়াকে জীবন্ত জীবাশ্মও বলা হয়, কারণ ৪৪ কোটি ৫০ লাখ বছর আগেও পৃথিবীতে এদের অস্তিত্ব ছিল। ডাইনোসরের চেয়েও প্রায় ২০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিল এই লিমুলাস। তাই এই জলজ প্রাণী বিজ্ঞানীদের কাছে আজও বিস্ময়ের।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি