হিলিতে টিকা কেন্দ্রে উপচেপড়া ভীড়
প্রকাশিত : ১৬:৩৭, ৬ আগস্ট ২০২১
টিকা ছাড়া বাহির হতে সমস্যা, টিকা নিলে সুস্থ্য থাকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা নিয়ে মানুষ সুস্থ্য থাকার কারনে সারাদেশের ন্যায় দিনাজপুরের হিলিতে করোনার টিকা নিতে দিন দিন সাধারন মানুষের মাঝে বেশ আগ্রহ বাড়ছে। আগে মানুষজনকে টিকা দিতে বিভিন্ন প্রচার প্রচারনা চালানো হলেও এখন মানুষ নিজে থেকেই টিকা কেন্দ্রে টিকা নিতে যাচ্ছেন এতে করে টিকা কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এদিকে টিকা নিতে মানুষ গায়ের সাথে গা ঘেষে লাইনে দাড়িয়ে থাকছে, মানা হচ্ছেনা কোন সামাজিক দুরত্ব, এতে করোনার সংক্রামন ছড়িয়ে পড়ার আশংকা অনেকের।
টিকা নিতে আসা হেলাল উদ্দিন ও ইসরাফিল হোসেন বলেন, আগে সবাই ভয় করছিল টিকা দিলে জ্বর হবে এছাড়াও মানুষ বিভিন্ন ধরনের কথা বলতো, নানা ধরনের ভয় ভীতি ও কুসংস্কারের কারনে আমরা আগে টিকা দেইনি। এছাড়া টিকা না দেওয়া থাকলে বাড়ির বাহিরে বের হওয়াসহ নানা সমস্যার সন্মুক্ষন হতে হবে এমন কথা শোনা যাচ্ছে। এখন অনেকেই টিকা দিচ্ছে, এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা প্রদান চলছে। টিকা দিলে নিজের ভালো হবে করোনায় তেমন ক্ষতি করতে পারবেনা, দেশ ও দশের ভালো হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার করে সকলকে টিকা দেওয়ার কথা বলছে। সেজন্য আমরা আজকে টিকা দিতে এসেছি হাসপাতালে, এখানে টিকা দিলাম আমাদের কোন প্রকার সমস্যা হয়নি, সুস্থ্য রয়েছি কোন ভয়ের কিছু নেই জানিয়ে সকলকে টিকা গ্রহনের অনুরোধ জানান তারা।
টিকা দিতে আসা ইউসুফ আলী বলেন, প্রথমবার যখন করোনার টিকা আসে সেসময় নানা রকম ভয়ভীতির কারনে অনেকে টিকা দিলেও আমি টিকা দেইনি। এখন নতুন টিকা আসছে সবাই টিকা দিচ্ছে যার কারনে দুদিন আগে টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করেছিলাম আজ টিকা দেওয়ার তারিখ ছিল। হাসপাতালে এসে টিকা নিলাম, আমার কোন সমস্যা হয়নি, আগে যে সমস্ত ভুল ধারনা ছিল সেগুলো সব কেটে গেছে। আমার মতো অনেক মানুষ হাসপাতালে টিকা দিতে আসছে যার কারনে মানুষের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।আর মানুষ কোন সামাজিক দুরত্ব মানছেনা, গায়ের সাথে গা ঘেষে লাইনে দাড়িয়ে থাকছে, এতে করে করোনার সংক্রামন ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন অনেকে।
টিকা দিতে আসা শেরেগুল ইসলাম ও মমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি, করোনার টিকা দিতে হাসপাতালে সকাল ৯টার দিকে আসছি এখন বাজে সাড়ে ১১টা কিন্তু এখন পর্যন্ত টিকা দিতে পারিনি এখনো লাইনে দাড়িয়ে রয়েছি। প্রচুর মানুষের ভিড় এতে টিকা দিতে বাড়তি সময় লাগার কারনে দীর্ঘক্ষন ধরে লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের। আমরা তো কাজের মানুষ, এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে এতে করে আমাদের মতো অনেক শ্রমিক ও কর্মজীবি মানুষজন চরম বিপাকে পড়েছেন। টিকা দান প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পুর্ন হলে আমরা তাড়াতাড়ি করে টিকা দিয়ে আমাদের যে কাজ কর্ম সেটি করতে পারতাম। এখনতো যে সময় লাগছে তাতে করে আমাদের আর টিকা দিয়ে এখান থেকে গিয়ে আর কোন কাজ কাম করা হবেনা।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.তৌহিদ আল হাসান বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় প্রাথমিক অবস্থায় গড়ে প্রতিদিন ২শ মানুষকে করোনার টিকা প্রদানের কথা। কিন্তু এখন উপজেলার মানুষ এতটাই সচেতন হয়েছে যে তাদের রেজিষ্ট্রেশনের হার অনেক বেশী একারনে গড়ে প্রতিদিন আমরা ৩শ থেকে ৪শ মানুষকে করোনার টিকা প্রদান করছি ক্যাপাসিটির বাহিরে গিয়ে।এখন পর্যন্ত এভাবে দিতে পারছি যখনি শেষ হয়ে যাচ্ছে তখনি দিনাজপুরে যাচ্ছি প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে তাদের করোনা টিকা দিয়ে যাচ্ছি। প্রথমের দিকে গড়ে প্রতিদিন ১থেকে দেড়শো মানুষকে করোনার টিকা প্রদান করা হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩শ থেকে ৪শ মানুষকে করোনার টিকা প্রদান করা হচ্ছে। গত ২৯ জুলাই থেকে ৫আগষ্ট পর্যন্ত সাতদিনে এই উপজেলায় ১হাজার ৯০৬জনকে করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
আরকে//
আরও পড়ুন