রামেকের করোনা ইউনিটে মৃতদের ৪০ শতাংশই রাজশাহীর
প্রকাশিত : ১৩:৩৫, ১৪ আগস্ট ২০২১
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে (এক আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত) ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৪ জন অর্থাৎ ৪০ শতাংশই রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। এছাড়াও এ হাসপাতালের করোনা ও উপসর্গ নিয়ে গড়ে প্রতিদিন ১৬ জন রোগী মারা গেছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালটিতে রাজশাহী ছাড়াও নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও জয়পুরহাটের রোগীরা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। বিশেষ করে যেসব জেলায় আইসিইউ বা ভেন্টিলেশন নেই, সেসব জেলার সদর হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীদের এই হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর চাপ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ করোনা ওয়ার্ডের সংখ্যা বাড়িয়ে ১৪টি করে। এতে ৫১৩টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত সব ওয়ার্ডেই কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ৬৯টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা রয়েছে। ভেন্টিলেশনসহ ২০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে এ হাসপাতালে।
চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বাকি ১০২ জন করোনা উপসর্গ ও করোনা নেগেটিভ হয়ে পরবর্তি নানা শারীরিক স্বাস্থ্য জটিলতায় মারা যান। এদের মধ্যে ৮৮ জন পুরুষ ও ৭২ জন নারী।
এই ১০ দিনে মারা যাওয়া রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মোট মৃত রোগীর ৪০ শতাংশই রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। অর্থাৎ মারা গেছেন ১৬০ জনের ৬৪ জনই রাজশাহী জেলার। এই ৬৪ জনের মধ্যে আবার ২৮ জন অর্থাৎ ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মৃত রোগীই রাজশাহী মহানগর এলাকার।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এএফএম আঞ্জমান আরা বেগম বলেন, রাজশাহী মহানগরে ভাসমান মানুষসহ প্রায় ১০ লাখ লোক বাস করেন। এলাকাটি উপজেলার চেয়ে অনেক ঘনবসতিপূর্ণ। এ জন্য মহানগরে করোনা সংক্রমণের হার বেশি।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় সিটি করপোরেশন এলাকা করোনার প্রথম সংক্রমণের সময় এক মাস করোনামুক্ত রাখা সম্ভব হয়েছিল। এখনো সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সচেতনতামূলক প্রচারণা চলছে।
জেলা করোনা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, বিধিনিষেধ শিথিল হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করলে আগের মতোই ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে নিজের থেকে সচেতন হওয়া, এটা জরুরি। প্রতিষ্ঠানকে তার কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে তৎপর থাকতে হবে। মার্কেট পরিচালনা কমিটির লোকদের দায়িত্ব নিতে হবে তাদের কর্মচারী এবং কাস্টমার যারা আসবেন, তারা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসেন।
এএইচ/
আরও পড়ুন