ঢাকা, সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ঢাকায়

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:১৬, ২১ আগস্ট ২০২১ | আপডেট: ১২:১৮, ২১ আগস্ট ২০২১

প্রায় এক মাস ধরে অসুস্থ্য প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে তাকে নিয়ে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার উদেশ্যে রওনা হয় বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মলয় ভৌমিক।

তিনি জানান, সকাল ১০টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাকে বিমানবন্দরে নেয়া হয়। পরে তাকে নিয়ে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রাজধানীর উদেশ্যে রওনা দেয়। ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. নজরুল ইসলামের অধীনে তিনি চিকিৎসা নেবেন। 

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হককে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ আগে গত ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় তাঁর ছেলে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসান এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার বাবার অসুস্থতার কথা জানান। 

তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আম্মা মারা যাওয়ার পর থেকেই আব্বা বড় একা, তাঁকে আরও একা করে দিয়েছে কোভিড-১৯ অতিমারি। ছেলেবেলা থেকে দেখে আসছি, বাঁচার জন্য আব্বার ভাত-তরকারির সাথে সাথে মানুষের সঙ্গ-হাসি-গল্প-গান দরকার হয়। সঙ্গত কারণেই এ সময় সেটা পাচ্ছেন না তিনি। আব্বা বয়সের ভারে শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন অনেকটা, মনটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছে, আড়ালে চলে যাচ্ছেন ধীরে ধীরে?’

ইমতিয়াজ হাসান আরও লিখেছেন, ‘গত এক মাস যাবৎ তিনি ভীষণ অসুস্থ, ছোট একটি শিশুর মতোই তাঁর পরিচর্যা করতে হয়। পরিবারের মানুষ আর গুটি কয়েক শুভানুধ্যায়ী ছাড়া আর কেউ সে কথা জানেন না। অনেকেই হয়তো মন চাইলেও তাঁর খবর নিতে পারেননি বা যোগাযোগ করতে পারছেন না। সে জন্যই এটুকু লেখা। আপনাদের দোয়ায়, প্রার্থনায় তাঁকে বেঁচে রাখবেন।’

হাসান আজিজুল হকের ছেলে ইমতিয়াজ হাসান বলেন, বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও আগে থেকেই তাঁর হার্টে সমস্যা, ডায়াবেটিস রয়েছে। বর্তমানে তিনি বেশি ভুগছেন হাইপোন্যাট্রিমিয়ায়। এটা হচ্ছে শরীরে লবণের ঘাটতি। তিনি একেবারে নিস্তেজ হয়ে গেছেন। চিন্তাশক্তিও কমে গেছে। খুব বেশি কথা বলতে পারছেন না। কাউকে সেভাবে চিনছেনও না।

চিকিৎসার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, লবণের ঘাটতি পূরণের জন্য তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে, লবণের ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাসাতেই তাঁর ইসিজি করানো হয়েছে। তিনি একবার পড়ে গিয়েছিলেন। সেখানে এক্স–রে করানো হয়েছে। সেখানে হালকা ফ্যাকচার ধরা পড়েছে। এ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া কঠিন। তাই চিকিৎসা বাড়িতেই চলছে। তিনি তাঁর বাবার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি