নওগাঁর আত্রাইয়ে চাঁই বিক্রির ধুম
প্রকাশিত : ১৬:৪৪, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
খাল-বিল অধ্যুষিত এলাকা ও মৎস্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার হাট-বাজারে এখন চাঁই বা (খলসানী) বিক্রির ধুম পড়েছে। উপজেলার খাল-বিল ও নদীতে এখন পানি টুই-টুম্বুর। তাই বিভিন্ন উপায়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত মানুষ। বিশেষ করে দেশী প্রজাতির ছোটজাতের মাছ ধরার গ্রাম বাংলার সহজলভ্য প্রাচীনতম উপকরণ বাঁশের তৈরি চাঁই কেনার ধুম পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিদিন শত শত চাঁই বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রোববার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক হাট আহসানগঞ্জে চাঁই পট্টিতে বেচাকেনার জন্য জনসাধারণের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
জানা যায়, উপজেলার সিংসাড়া ও পাশের উপজেলার নিজামপুর, ঝিনা, খট্টেশ্বর, কৃষ্ণপুর-মালঞ্চিসহ বিভিন্ন গ্রামের ঋষি সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের পরিবারের সকল সদস্যরা মিলে এই চাঁই তৈরি করে আসছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে থেকেই তাদের নিঁপুণ হাতে তৈরি এসব চাঁই বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়।
বাঁশ, কটের সুতা এবং তাল গাছের আঁশ দিয়ে তৈরি এসব চাঁই মানের দিক দিয়ে ভালো হওয়ায় হাওর অঞ্চলের মাছ শিকারীরা এখান থেকে পাইকারি মূল্যে তা কিনে নিয়ে যায়। ফলে এ পেশায় জড়িত পরিবারগুলো যথাযথ মূল্য পাওয়ায় তাদের মধ্যে উৎসাহ তৈরি হয়।
কারিগররা এসব চাঁই (খলশানি) তৈরিতে প্রকার ভেদে খরচ হয় ১শ’ থেকে ২শ’ টাকা আর বিক্রি হচ্ছে ২শ’ থেকে ৩ শত টাকায়। এতে খুব বেশি লাভ না হলেও পৈতৃক এ পেশা ছাড়তে তারা নারাজ। ছোট জাতের মাছ ধরার সূতি, ভাদায় ও কারেন্টজালের দাপটে দেশি প্রযুক্তির বাঁশের তৈরি খলশানি সামগ্রী এমনিতেই টিকে থাকতে পারছে না। কিন্তু জীবনের তাগিদে তারা একেবারে কর্মহীন হয়েও থাকতে চায় না।
এ ব্যাপারে উপজেলার সিংসাড়া গ্রামের অনিল, রেদোলা ও ঝিনা গ্রামের একরাম উদ্দিন জানান, খলশানি (চাঁই) তৈরির সামগ্রীর দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তাই আগের মতো আর লাভ হয় না। দীর্ঘদিন থেকে বাপ-দাদার এ ব্যবসায় জড়িত তাই ছাড়তেও পাড়ছি না।
সরকারি-বেসরকারী পৃষ্টপোষকতা ও সহযোগীতার আশা করছেন তারা।
এএইচ/
আরও পড়ুন