ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

কীটনাশক দিয়ে সাড়ে ৫ বিঘা জমির ধান নষ্টের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২১:৫৭, ১২ অক্টোবর ২০২১

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের পাতইল গ্রামে কীটনাশক প্রয়োগ করে দুর্বৃত্তরা সাড়ে ৫ বিঘা জমির রোপনকৃত আমন ধান বিনষ্ট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে কপাল পুড়েছে ওই জমির বর্গাচাষী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তারানু সরদার (৩৮) ও স্থানীয় মিঠুন আলীর (৪০)।

এতে তারা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় উৎপাদনের দিক ধেকেু প্রায় দেড়'শ মন ধানের উৎপাদন ব্যহত করা হয়েছে। এর আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা। তবে এ ঘটনায় জমির মালিক সামসুল হক শাহ মঙ্গলবার বিকেলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।  

জানা গেছে, পাশের পোরশা উপজেলার নোনাহার গ্রামের সামসুল হক শাহ্ এর স্ত্রী উম্মে কুলসুম ওয়ারিশমূলে পাতইল মৌজার ১ একর ৮৭ শতাংশ সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়ে ভোগ দখল করে আসছেন। তাদের ওই সম্পত্তি বেশ কিছুদিন ধরে বর্গাচাষী পাতইল গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তারানু সরদার ও কুশমইল গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মিঠন আলী বর্গাচাষ করে আসছেন। চলতি আমন মৌসুমে তারানু সরদার সাড়ে ৩ বিঘা ও মিঠুন আলী ২ বিঘা জমিতে আমন চাষ করে।

এ বিষয়ে বর্গাচাষী তারানু সরদার বলেন, আমি খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করি। পানি সেচ, সার-বিষ সব দেওয়া শেষ হয়েছে। ধান বের হতে শুরু করেছে। ধান গাছও খুব সুন্দর হয়েছিল। এক মাসের মধ্যে আমার ধান আমার ঘরে উঠতো। অথচ শত্রুতা করে গত সোমবার রাতের অন্ধকারে ঘাস নিধনে অতিমাত্রার কীটনাশক মারা বিষ দিয়ে আমার ধান গাছ পুড়ে দিয়ে আমার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তার অভিযোগ পাশের কাটনা গ্রামের মোদাচ্ছের উদ্দিন, পাতইল গ্রামের জাহাঙ্গীর ও হুমায়ন ইতিপূর্বে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় হুমকি দিয়ে আসছিল ধান রোপন করলেও ঘরে তুলতে পারবো না। আমার ধারণা তারাই এ কাজ করেছে।

তারানু সরদারের বাবা বিরসা সরদার বলেন, আমরা অনেক দিন যাবত এ জমি বর্গা চাষ করে আসছি। জাহাঙ্গীর ও হুমায়নরা এর আগে এ জমি বর্গা চাষ করতো। এখন তারা না পেয়ে এবং জমির প্রতিপক্ষ অংশীদারদের কথা মত এ কাজ করেছে। 

আরেক বর্গা চাষী মিঠন বলেন, আমিও অনেক কষ্টে আবাদ করেছি। আমার সব ধান নষ্ট করে দিয়েছে। এখন আমি কি ধান ঘরে তুলবো। কিভাবে সংসার চালাবো। কিভাবে ঋন শোধ করবো। কোন কিছু বুঝে উঠতে পারছি না।

জমির মালিক উম্মে কুলসুমের স্বামী সামসুল হক শাহ বলেন, আমার স্ত্রী এ জমির মালিক। মার কাছ থেকে ওয়ারিশসূত্রে পেয়েছে। অথচ আমার স্ত্রী ভাই পোরশা উপজেলার বাংধারা গ্রামের মৃত-বদরুজ্জামানের ছেলে আবুল হোসেন বাবু মালিকানা দাবি করে। এ নিয়ে কোর্টে একটি বাটোয়ারা মামলা রয়েছে। তারই সূত্র ধরে তাদের পূর্বের বর্গাচাষীদের লেলিয়ে দিয়ে এ ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে। ধান পুড়ে দিয়ে আমার ও দেশের চরম ক্ষতি করেছে তারা। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

তবে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম ধান বিনষ্ট করার বিষয় প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আমি বা আমার ভাই এর কিছুই জানি না। জমি আমারও না আমার বাবারও না। আমরা আগে বর্গা চাষ করতাম। কিন্তু এখন করি না। আমরা কেন এ কাজ করবো। আমাদের উপর মিথ্যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 
কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি