বেনাপোল বন্দর থেকে তৃতীয় দিনের মত আমদানি পণ্য বন্ধ
প্রকাশিত : ১৮:৫৬, ৭ নভেম্বর ২০২১
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ বাস, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে রোববার তৃতীয় দিনের মত বেনাপোল বন্দর থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য ও যাত্রী পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ফলে বেনাপোল বন্দর এলাকায় যেমন পণ্যজট তৈরি হয়েছে তেমনি গন্তব্যে যেতে না পেরে আটকা পড়েছে পাসপোর্টধারীসহ সাধারণ যাত্রীরা। তবে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। দু‘দেশের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল করলেও তার সংখ্যা কম।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে আমদানি পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় শিল্প কলকারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহতের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে চলমান সমস্যা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বেনাপোল থেকে কোন পরিবহন ও বেনাপোল-যশোর সড়কে কোন বাস চলছে না। হুট করে দেওয়া এমন ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় মানুষসহ ভারত ফেরত যাত্রীরা। আর এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অটোরিকশার, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা। যে জায়গার ভাড়া সাধারণ সময়ে ১৫ টাকা ছিল সেই জায়গায় এদিনে তারা ২৫ থেকে শুরু করে ৩০ টাকা চাচ্ছেন। নিরুপায় হয়ে অনেকে বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে লিটারে ১৫ টাকা মূল্য বৃদ্ধি অযৌক্তিক। তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে যে পরিমাণ ভাড়া বৃদ্ধি হচ্ছে তা আমদানিকারকরা মানতে পারছেন না। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মূল্য বৃদ্ধি পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর থেকে কোনো ট্রাক পণ্য পরিবহন করবে না। কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্তে বেনাপোল বন্দর থেকে সব ধরণের যাত্রীবাহী পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, তেলের বাজার মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়েছে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে। আমদানি খরচ বেড়ে গেলে এর খেসারত গুণতে হবে সাধারণ মানুষকে। বর্তমান মূল্য কমিয়ে সহনশীল পর্যায়ে রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এ ব্যবসায়ী।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, বেনাপোল বন্দর থেকে সবচেয়ে বেশি শিল্প কলকারখানার কাঁচামাল আমদানি হয়ে থাকে। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ধর্মঘটের কারণে বেনাপোল বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের আমদানি পণ্য পরিবহন করতে পারছেন না। দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে শিল্প কলকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হবে।
বেনাপোল সোহাগ পরিবহণের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, রাতে ঢাকার পরিবহণ চলার কথা রয়েছে। ঢাকায় মালিক পক্ষের সাথে কথা হয়েছে। বাসের টিকিট বিক্রি করছি। দেখা যাক কি হয়।
যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু জানান, করোনায় সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে পরিবহন খাতের। এমন সময়ে তেলের দাম এক লাখে ১৫ টাকা বৃদ্ধি এক প্রকার জুলুম। শ্রমিক ফেডারেশনের সারাদেশের দুইশ‘ শাখা ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিজেলের দাম না কমানো ও বাস ভাড়া সমন্বয় না করা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মাদ রাজু বলেন, শুক্রবার কিছু যাত্রী যাতায়াত করলেও শনিবার সকাল থেকে ভারতগামী যাত্রীর চাপ কম। দূরপাল্লাসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকায় হয়ত এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে। তবে ভারত থেকে যাত্রী আসা স্বাভাবিক রয়েছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, পরিবহন বন্ধের কারণে ভারতগামী যাত্রী কম হলেও ভারত থেকে ফেরত আসা যাত্রী স্বাভাবিক রয়েছে।
আরকে//
আরও পড়ুন