শেরপুরে বৈদ্যুতিক ফাঁদে গেল বন্য হাতির প্রাণ
প্রকাশিত : ১৮:১৯, ৯ নভেম্বর ২০২১

প্রাণহীন সেই বন্য হাতিটি
শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তবর্তী মালাকোচা গ্রামে এক বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে রানীশিমুল ইউনিয়নের মালাকোচা গ্রামের বন বিভাগের সংরক্ষিত পাহাড়ি টিলায় ঘটনাটি ঘটেছে। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ভোরে বন বিভাগের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
খরব পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা যায়, প্রায় ২০ দিন ধরে বন্য হাতির দল শ্রীবরদী সীমান্তবর্তী বিভিন্ন পাহাড়ে অবস্থান করছে। পাহাড়ে খাদ্য সংকট থাকায় হাতির দল সন্ধ্যা হলেই লোকালয়ে নেমে এসে কৃষকদের পাকা ধান, সবজি বাগানসহ নানা ফসলাদি নষ্ট করছে। হাতির আক্রমণ থেকে ফসলাদি রক্ষা করতে এলাকাবাসী সন্ধ্যার পর থেকে অবৈধভাবে জিআই তারের ঘের দিয়ে জেনারেটরের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখছে।
জানা গেছে, মালাকোচা গ্রামে মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আমির উদ্দিন (৪৫) পাহাড়ি টিলায় সংরক্ষিত বন বিভাগের জায়গায় অবৈধভাবে সবজি বাগান করেছে। সোমবার দিবাগত রাতে এক দল হাতি খাদ্যের সন্ধানে ওই বাগানে আসে। এসময় জিআই তারে জেনারেটরের বিদ্যুতে স্পৃষ্ট হয়ে ২০-২৫ বছর বয়সী ১৫ ফুট লম্বা একটি পুরুষ হাতির মৃত্যু হয়। পরে ঘটনাস্থলেই গর্ত করে মৃত হাতিটি মাটি চাপা দেয়া হয়।
বালিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, এলাকার লোকজন বাড়িঘর ও ফসলাদি রক্ষার জন্য বৈদ্যুতিক লাইন দিয়ে রেখেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, ওই তার থেকেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভেটেনারি সার্জন ডা: মেহেদি হাসান বলেন, মৃত হাতিটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ল্যাবের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, হাতি মারা যাওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রায় ২০ দিন আগে বন্য হাতির দল খাদ্যের সন্ধানে ভারত থেকে শ্রীবরদী সীমান্তবর্তী পাহাড়ে এসেছে। এলাকার লোকজন জান-মাল রক্ষার্থে বিভিন্নভাবে কাজ করছে। হাতিটির নমুনা সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, হাতির উপদ্রব থেকে মানুষকে রক্ষা করতে উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগসহ সকলেই বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেভাবে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে তা দুঃখজনক। পাহাড়গুলো হাতির বিচরণ ভূমি। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, যেন হাতির কোন ক্ষতি না হয়।
এনএস//
আরও পড়ুন