‘অবহেলায়’ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ভাঙচুর
প্রকাশিত : ১৭:২১, ৬ ডিসেম্বর ২০২১
সদ্যজাত কোলে নিহতের মা
লক্ষ্মীপুরে নিউ আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ‘অব্যবস্থাপনা’ ও সিভিল সার্জন আব্দুল গাফফারের ‘অবহেলায়’ ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে হাসপাতালের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন নিহতের স্বজনরা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের নিউ আধুনিক হাসপাতাল নামের একটি বেসকারি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। মৃত প্রসূতির নাম শিমু আক্তার। তিনি সদর উপজেলার শাকচর গ্রামের লাভলুর স্ত্রী।
মৃতের চাচাত ভাই আলাউদ্দিন জানান, রোববার বিকালে শিমুর প্রসব বেদনা ওঠায় প্রথমে তাকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে শিশুর অবস্থান ‘উল্টো’ ধরা পড়ে। পরে তাকে ‘নিউ আধুনিক’ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিকাল ৩টার দিকে শিমুর সিজার করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আলাউদ্দিন বলেন, ‘এ সময় সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফফার শিমুর অস্ত্রোপচার করেন। কিছুক্ষণ পর শিমুর নবজাতককে স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এরপর ডাক্তার আরেক প্রসূতির অস্ত্রোপচার করতে চলে যান। কিন্তু শিমুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিবারের কাছে কিছুই জানাচ্ছিলেন না তিনি।’
মৃতের পরিবারের এই সদস্য আরও বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর শিমু স্ট্রোক করেছে জানিয়ে চিকিৎসক আব্দুল গাফফার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিকাল ৫টার দিকে তাকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেন। পরে সেখানে গিয়ে শিমুর মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন পরিবারের লোকজন। পরে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে নিউ আধুনিক হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
নিহত শিমুর মা জেসমিন বেগমের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ‘অব্যবস্থাপনা’ ও ‘চিকিৎসকের অবহেলায়’ তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতের খালাতো বোন শিউলি বলেন, “এনেস্থেশিয়া চিকিৎসক ছাড়াই অপারেশন করায় আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “প্রেসার বেড়ে ‘স্ট্রোক করে’ রোগী মারা গেছে। এনেস্থেশিয়া চিকিৎসক ইকবাল ও নাছিম নামে দুইজনই অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন।”
এ ঘটনায় জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে চিকিৎসক আনোয়ার হোসেনের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।”
এনএস//
আরও পড়ুন