ঢাকা, শুক্রবার   ১১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

কক্সবাজারে ৪ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেছে রোহিঙ্গারা, মুক্তিপণ দাবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:২৩, ৯ ডিসেম্বর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

কক্সবাজারের ৪ স্কুল শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে রোহিঙ্গারা।

গত মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ মাঙ্গালাপাড়া বাতিঘর কটেজ এলাকা থেকে এ স্কুল শিক্ষার্থীদের সেন্টমার্টিনে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অপহরণ করা হয়।

অপহৃতরা হলেন, রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেচারদ্বীপের মাঙ্গালা পাড়া এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ কায়সার (১৪), একই এলাকার মোহাম্মদ আলমের ছেলে মিজানুর রহমান নয়ন (১৪), আব্দুস সালামের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (১৫) ও ফরিদুল আলমের ছেলে মিজানুর রহমান (১৪)। তাদের মধ্যে জাহেদুল ইসলাম সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণী ও বাকিরা অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।

স্থানীয় প্রতিবেশী হাজি আবদু শুক্কুর জানান, স্থানীয় বাতিঘর রিসোর্টের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও মো. ইব্রাহীমের সঙ্গে ওই স্কুল শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সে সম্পর্কের সুত্র ধরে সেন্টমার্টিন বেড়াতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ফিরে না আসায় অভিভাবকরা খোঁজখবর নিলে রোহিঙ্গারা তাদের জীবিত ফিরে পেতে হলে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কোন উপায়ন্তর না দেখে অভিভাবকরা রামু থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

রামু থানায় দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, রামুর পেচারদ্বীপের বাতিঘর নামে একটি কটেজের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও মো. ইব্রাহীমের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয় চার স্কুলছাত্রের। সে সুবাধে গেল ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহীম চার স্কুলছাত্রকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে নেয়ার কথা বলে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় নিয়ে যান। মূলত ইব্রাহীম ও জাহাঙ্গীর দুইজনই রোহিঙ্গা ছিল। সেখানে বেড়াতে যাওয়ার পর থেকে ওই চারজনের খোঁজ মিলছে না। নিখোঁজের ২৪ ঘন্টা পর ৮ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে স্বজনদের কাছে বিভিন্ন অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন করে তাদের মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছে। অন্যথায় তাদের লাশ ফেরত দেয়া হবে বলেও হুমকি দিচ্ছেন তারা।
 
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৬ নং ব্লকের মোহাম্মদ কাছিমের ছেলে ও তার সহযোগী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের বাড়িও সেখানে। তারা দুইজনই বাতিঘর কটেজের বয় হিসেবে কর্মরত ছিল।
 
স্কুলছাত্র জাহেদুল ইসলামের বাবা আব্দুস সালাম বলেন, “বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে গেছে ওই দুইজন। যাওয়ার পর থেকে খোঁজখবর নিতে ফোন দিলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহীমের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বুধবার দুপুরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী পরিচয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করছে।

অপহরণের শিকার কায়সারের চাচা মোহাম্মদ তাহের বলেন, “মূলত জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহীম চারজনকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে নেয়ার কথা বলে নিয়ে যান। পরে তাদের মুঠোফোন ব্যবহার করে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে।”
 
রামু খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার সোহেল সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অপহৃত স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রামু থানা পুলিশ এ বিষয়ে যাবতীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে শুনেছি।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি দায়িত্বপ্রাপ্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, “যেহেতু বিষয়টি টেকনাফ থানায় এলাকায় পড়েছে। আমরা তাদের সহযোগীতায় বিষয়টি তদন্ত করবো। নিজেদের জায়গা থেকে যতটুকু পারা যাবে ততটুকুই চেষ্টা করবে পুলিশ।”
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি