শেরপুরে অটোরিকশা চালকের গলিত লাশ উদ্ধার
প্রকাশিত : ২০:৫৭, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় থেকে মো. হোসেন আলী (৩৫) নামে এক অটোরিকশা চালকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে র্যাব-১৪। মো. হোসেন আলী শ্রীবরদী পৌরসভার শেখদী এলাকার মৃত. আশরাফ আলীর ছেলে।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তঘেষা নওকুচি গ্রাম থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে র্যাব-১৪ সদস্যরা।
এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব দু'জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন, ঝিনাইগাতী উপজেলার নওকুচি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে সুমেল রানা (৩২) ও শ্রীবরদী উপজেলার ভেলুয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. সুজন (৩২)। ওই দুই যুবক গত ২৬ নভেম্বর অটোচালক হোসেন আলীর অটোরিকশাটি যাত্রী বেশে ছিনতাইয়ের পর তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাহাড়ী এলাকায় মাটিচাপা দিয়ে গুম করে।
বিষয়টি র্যাবকে জানানো হলে র্যাব অনুসন্ধান করে ঝিনাইগাতীর নওকুচি থেকে সুমেল নামে এক ছিনতাইকারীকে আটক করে। তার তথ্য মতে আরেক ছিনতাইকারী শ্রীবরদীর ভেলুয়ার সুজনকে আটক করে। পরে তারা জানায়, অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তারা যাত্রী বেশে অটোরিকশায় ওঠে গারো পাহাড়ে নিয়ে যায়, এবং তাকে হত্যা করে মাটির নিচে পুতে রাখে।
র্যাব-১৪, জামালপুর ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোসেন আলী গত ২৬ নভেম্বর সকালে তাঁর অটোরিকশাটি নিয়ে শ্রীবরদী উপজেলার শেখদী এলাকার বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তিনি আর বাড়ি ফিরে যায়নি। এ ঘটনায় হোসেন আলীর বড়ভাই মো. আবুল কাশেম গত ২৯ নভেম্বর শ্রীবরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে তাঁর বড়ভাই আবুল কাশেম গত ১০ ডিসেম্বর র্যাবের জামালপুর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা গোয়েন্দা তদন্তের মাধ্যমে গত সোমবার সুমেল রানা ও মো. সুজনকে আটক করেন। পরে তাঁদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে র্যাব সদস্যরা ঝিনাইগাতী উপজেলার নওকুচি গ্রামে মাটি খুড়ে মো. হোসেন আলীর গুম করা গলিত লাশ উদ্ধার করেন।
এ সময় র্যাব-১৪ অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. রুকুনুজ্জামান, জামালপুরের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃনাল কান্তি সাহাসহ র্যাব কর্মকর্তারা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জয়নাল আবেদীন, বিজিবি, নকশী সীমান্ত ফাঁড়ি ও ঝিনাইগাতী থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
র্যাব-১৪, জামালপুরের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান বলেন, র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সুমেল রানা ও সুজন মো. হোসেন আলীকে হত্যা শেষে অটোরিকশা থেকে ব্যাটারিটি খুলে নিয়ে তা ঝিনাইগাতী বাজারে বিক্রি করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। উদ্ধার হওয়া লাশটি গলিত ছিল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জয়নাল আবেদীনের উপস্থিতিতে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক সুমেল ও সুজন অটোচালক হোসেন আলীকে হত্যা করে তাঁর লাশ গারো পাহাড়ে মাটিচাপা দিয়ে রেখে ছিলেন।
কেআই//
আরও পড়ুন