ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

গান-বাজনা নয়, কোরআন খতমের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী বিয়ে!

আবুল হাসান, মোংলা থেকে

প্রকাশিত : ১৯:৪১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৯:৪৩, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১

গান-বাজনা বাজিয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের অনুষ্ঠান- এটা আমাদের সমাজের খুবই সাধারণ একটা চিত্র। কিন্তু মুসলিম বর-কনে হিসেবে একটা বিয়ের অনুষ্ঠান কেমন হবে- সেই অভিজ্ঞতা নেই আমাদের অনেকেরই। 

তবে এবার চিরাচরিত ওই নিয়ম ভেঙে গান-বাজনার বদলে বিবাহের অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন খতমের আয়োজন করে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রশংসায় ভাসছেন মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু সাইদ শেখ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর, সবাই ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের জন্য তাকে শুভকামনা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোববার (১৯ ডিসেম্বর) কনে সাদিয়া আক্তারের বিয়ের দিন প্রচলিত গান-বাজনার বদলে কোরআন খতমের আয়োজন করেন তাঁর বাবা আবু সাইদ শেখ। সাদিয়া আক্তার মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের আবু সাইদ শেখের বড় মেয়ে।

রোববারই তাঁর বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। এদিন নিজ বাড়িতেই স্থানীয় এতিমখানার হাফেজ সাহেবগণ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে পবিত্র কোরআনে কারিম তিলাওয়াত করে খতম দেন।

জয়মনি হাফিজিয়া মাদ্রাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত হাফেজ নূরে আলম বলেন, বিয়ে একটি সর্বজন স্বীকৃত সবচেয়ে পবিত্র সামাজিক বন্ধন। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণ এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণী সমাজের এবং ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সমাজের এবং পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়। প্রায় প্রত্যেক ধর্মে বিয়ে সম্পর্কে বাণী দেয়া হয়েছে। বিয়ে হল- সমাজ স্বীকৃত বংশবৃদ্ধি করার একটি শুদ্ধ প্রক্রিয়া। 

তিনি আরও বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সবসময় শান্তি এবং সমৃদ্ধির জীবনব্যবস্থা। ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা, যেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমে দুইজন স্বামী-স্ত্রীর সংসার শুরু হয়। তাই কোরআনে বিভিন্ন আয়াত নাজিল হয়েছে বিয়ে নিয়ে।

ব্যতিক্রমী এ বিয়ের বিষয়ে উপজেলার চিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন বলেন, বিয়ের প্রথম থেকেই আমি সব কিছু জানি। কাবিনের সময়ও আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। মেয়ের বাবা আবু সাইদ শেখ একজন নামাজি ও ভালো মনের মানুষ। আর এ জন্যই তাঁর এমন আয়োজন। আর আমি এমন বিয়ের আয়োজনে ব্যক্তিগতভাবে খুব খুশী। আমার ইউনিয়নে এর আগে এমন কোনও আয়োজন হয়নি। এ ব্যতিক্রমী আয়োজনের জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে আয়োজক কনের পিতা আবু সাইদ শেখ বলেন, মুসলিম হলেও আমাদের বিয়ে ইসলাম মেনে হয় না। অপসংস্কৃতি রোধে ও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে আমি এই আয়োজন করেছি। আমি বিশ্বাস করি, বিয়েতে যদি ইসলামি রীতি-নীতি পরিপালিত হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ দাম্পত্য জীবনও সুখের হবে। আমি সবার কাছে দোয়া চাই এবং সবাইকে ইসলামি আদর্শ মেনে বিয়ে করার আহ্বান জানাই।

সেইসঙ্গে এর মধ্যদিয়েই এলাকার মানুষেরা অপসংস্কৃতি বাদ দিয়ে ইসলামি সংস্কৃতিতে ফিরে আসবে বলেও মনে করেন তিনি। 

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি