মাথার চুলকেটে নির্যাতন, স্বামী-শাশুড়িসহ গ্রেপ্তার ৩
প্রকাশিত : ১৯:৩৬, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার শাশুড়ি, স্বামী ও দেবর (ডান থেকে)
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের খাস সাতবাড়িয়া গ্রামের গুলনাহার পারভীন মিনু (৩০) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন, মাথার চুল ও দুই চোখের ভ্রু কেটে দেয়ার ঘটনায় স্বামী, শাশুড়ি ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১২। মঙ্গলবার ভোরে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হল- শাহজাদপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে ও নির্যাতিতার স্বামী মেহেদী হাসান সুজন (৪৩), দেবর মোঃ সুমন (৩৫) ও শাশুড়ি মোছাঃ ময়না বেগম (৫৫)।
এর মধ্যে মেহেদী হাসান সুজনকে সাভার থেকে ও অপর দুইজনকে সাতবাড়িয়ার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে সিরাজগঞ্জ র্যাব-১২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মুশফিকুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, ২০০৬ সালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের খাস সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে ও গার্মেন্টস কর্মী মেহেদী হাসান সুজনের সঙ্গে তাড়াশ উপজেলার পৌর সদরের নিকারীপাড়ার মৃত গোলাম মোস্তফার মেয়ে মোছা. গুলনাহার পারভীন মিনুর বিয়ে হয়। তাদের ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে।
মেহেদী হাসান সুজন চাকুরির সুবাদে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকার সাভার এলাকায় বসবাস করেন। গত ৩ ডিসেম্বর শাহজাদপুরের সাতবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে স্ব-পরিবারে বেড়াতে আসেন। এরপর গত ১৫ ডিসেম্বর মেহেদী হাসান সুজন ও তাঁর স্ত্রী মোছা. গুলনাহার পারভীন মিনুর মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে ঝগড়ার এক পর্যায়ে গৃহবধূ মিনুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপর তার মাথার চুল ও দুই চোখের ভ্রু কেটে দেয়া হয়।
গৃহবধূর পরিবারের লোজকন খবর পেয়ে তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে গত ১৯ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূর মামা বকুল হোসেন বাদী হয়ে গত ২০ ডিসেম্বর শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামালা নং-২৫। পরে এ মামলার বাদী সিরাজগঞ্জ র্যাব-১২ এর কাছে আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য একটি লিখিত আবেদন করেন। তার এ আবেদনের প্রেক্ষিতে সিরাজগঞ্জ র্যাব-১২ এর একটি দল ২১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভোর রাতে তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে আসামি মেহেদী হাসান সুজনকে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে ও তার মা ও ভাইকে শাহজাদপুরের খাস সাতবাড়িয়া গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে শাহজাদপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে সোমবার বিকেলে নির্যাতিতা গৃহবধূ মিনুর স্বজনেরা তাড়াশ প্রেসক্লাবের সামনে আধা ঘণ্টাব্যাপী এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা করিম বক্স, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল শেখ, তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি সনাতন দাশ, সাংবাদিক মৃণাল সরকার মিলু, ইউপি সদস্য বকুল হোসেন প্রমুখ। বক্তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এনএস//
আরও পড়ুন