পর্যটক ধর্ষিত: আসামিরা ওই নারীর পুর্ব পরিচিত দাবি পুলিশের
প্রকাশিত : ০৯:০৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট) মো: জিল্লুর রহমান
কক্সবাজারে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে আসা নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলায় গত তিনদিনেও কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে আসামি আশিকুল ইসলাম ধর্ষিতা নারীর পুর্বপরিচিত বলে দাবি করছে পুলিশ। এমনকি ওই নারী গত তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছিলেন।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো: জিল্লুর রহমান এ দাবি করেন।
মো: জিল্লুর রহমান বলেন, ‘কক্সবাজারে আলোচিত নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলাটি থানায় রুজু হওয়ার পর তদন্তভার ট্যুরিস্ট পুলিশকে দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ভিকটিম নারীকে মেডিকেল রিপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভিকটিক তিন মাস কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। ওনার সঙ্গে আসামি আশিক ও বাবু পূর্বপরিচিত। এই ভদ্রমহিলা স্বামী-সন্তানসহ বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছিলেন। অর্থাৎ এক হোটেলে তিনমাস ছিলেন এরকম নয়।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। বিশেষ করে ওইদিন রাতে ভিকটিম নারী আসামি আশিকুল ইসলাম শাকিলের মোটরবাইকের পেছনে বসে হোটেল জিয়া গেস্ট ইন-এ যান। এসময় অসংখ্য লোকজন ছিল। কিন্তু, ভিকটিম নারী কোন ধরণের চিৎকার বা উঁচু বাক্য করেননি। আমরা চাই, মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে আসল ঘটনা উদঘাটিত হোক এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হউক।’
এদিকে, কক্সবাজারে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার নারী পর্যটকের জবানবন্দি গ্রহণ করেছে আদালত। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘আলোচিত এই মামলাটি ভিকটিমের অভিযোগ, আদালতের জবানবন্দি, মেডিকেল রিপোর্ট, সাক্ষীদের সাক্ষ্যসহ যাবতীয় বিষয় গুরুত্ব সহকারে ট্যুরিস্ট পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি।’
কক্সবাজারের হোটেল মোটেল জোনে অনেক অপরাধী রয়েছে স্বীকার করে পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কলাতলী হোটেল জোনে কেউ মাদক ব্যবসার সাথে যুক্ত, আবার কেউ দালালী ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত। আমরা সবগুলো বিষয় নিয়ে এগুচ্ছি। আসামি আশিকুল ইসলাম আশিকের সাথে কারা জড়িত, তার আয়ের উৎসব কি এবং কার ইন্ধনে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-সন্তান নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসা ধর্ষণের শিকার হন নারী পর্যটক। ওই নারীর ভাষ্য, ‘স্বামী-সন্তান নিয়ে ওইদিন সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছেন। উঠেন শহরের হলিডে সী-ল্যান্ডের ২০১নং কক্ষে। বিকালে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে লাবনি বিচে যান।
ওই রাতে হোটেলে ফেরার পথে এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এতে স্বামীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে ওই যুবক। বাধা দিলে তার সঙ্গেও তর্কে জড়ায় যুবক। ওই সময় আরও দুই যুবক ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়। তারা স্বামী-সন্তানকে ইজিবাইকে তুলে দিয়ে ওই নারীকে আলাদা করে ফেলে।
পরে ওই এলাকার একটি ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে তিনজনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর স্বামী-সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে শহরের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে নিয়ে যায় জানান ভিকটিম নারী।
এএইচ/
আরও পড়ুন