ঢাকা, শুক্রবার   ১১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বালু উত্তোলন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ মানছে না জেলা প্রশাসন

রাজশাহী প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ২৩:১৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ২৩:১৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

রাজশাহীর মধ্য শহর তালাইমারী বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় বাজে কাজলা ও কাজলা মৌজায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সকল কার্যক্রম বন্ধে আইনগত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে গত ৭ নভেম্বর এ আদেশ দেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মামনুন রহমান ও খন্দকার দিলরুজ্জামান এর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদেশটি চার সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর করে হাইকোর্টকে অবহতি করারও নির্দেশ দেয়া হয়। জাহাঙ্গীর আলম নামের এক বালু ব্যবসায়ী এই রিট আবেদন করেন। কিন্তু পৌনে দুই মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এ নিয়ে জেলা প্রশাসক কোন পদক্ষেপ নেয়নি। 

এর আগে ২০১৯ সালে একটি রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে তালাইমারি এলাকার কাজলা মৌজায় বালু উত্তোলন, মজুদ ও পরিবহন বন্ধের আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশে সেখানে নোটিশ ঝুলিয়ে বালু কারবার বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। সে আদেশ এখনো কার্যকর রয়েছে। এরপরেও সেখানে অব্যাহত রয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলন।

প্রায় দুই বছর ধরে পদ্মাপাড়ের এই পয়েন্টটি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সেখানে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ দেয় এলাকাবাসীসহ পরিবেশ রক্ষা সংগঠনের পক্ষ থেকে। এরপর একবার অভিযান পরিচালনা করে ঘাটটি বন্ধ করেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু জেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ অবৈধ বালু কারবার অব্যাহত রেখেছে ওই বালু ব্যবসায়ী।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ১৭ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের সহকারি রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে আদেশের কপি জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এরপর হাইকোটের আদেশ বাস্তবায়ন জন্য গত ৬ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এর পরও জেলা প্রশাসক হাইকোটের আদেশ আমলে নেয়নি। সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, তালাইমারি এলাকা থেকে কেউ বালু কাটছে না। ৮/১০ কিলোমিটার দুর থেকে বালু নিয়ে এসে সেখানে আনলোড করছে পরিবহনের জন্য। সেখানে বালু কাটছে কিনা তা দেখার জন্য সার্বক্ষণিক সোর্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও একটি রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট থেকে যে আদেশ দেয়া হয়েছে তার জবাব দেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

এদিকে, শনিবার সরজমিনে তালাইমারি ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ড্রেজিং করে দুইটি পাইপের মাধ্যমে সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন। নদীর ৬ কিলোমিটার ভাটিতে একটি বালুমহাল ইজারা নিয়েছেন এই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। কিন্তু তিনি নির্ধারিত এলাকার বাইরে গিয়ে এভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষায় গত ১১ আগস্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে তালাইমারি পয়েন্টে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়। এর পর অভিযান পরিচালনা করে সেখানে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু মাস যেতে না যেতে সেখানে আবারও শুরু অবৈধ বালু উত্তোলনের কারবার।

স্থানীয় পদ্মাপাড়ের বাসিন্দা আনার আলী জানান, তালাইমারী নগরীর মধ্য শহরের একটি পয়েন্ট। ঘন জনবসতিতে পূর্ণ। এখানে বিজিবির ক্যাম্পও রয়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে এখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসন নোটিশ লাগিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে। কিন্তু কিছুদিন বন্ধ থাকার পর বালুদস্যুরা আবারও বালু লুটের কারবার শুরু করে দেয়। 

তিনি আরও বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধে ২০১৯ সালে প্রথম হাইকোর্টে রিট করেন বর্তমানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারি স্বেচ্ছাসেক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। তার রিটের প্রেক্ষিতে আদালত কাজলা মৌজা দিয়ে বালু উত্তোলন, মজুদ ও পরিবহন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি