ঢাকা, রবিবার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কবে হবে ‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর’?

আবুল হাসান, মোংলা থেকে

প্রকাশিত : ১২:০৪, ১০ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১২:০৭, ১০ জানুয়ারি ২০২২

সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের জুনে চালু হবে বহুল প্রত্যাশিত ‘পদ্মা বহুমখী সেতু’। আর খুলনা-মোংলা রেল লাইন ছাড়াও চলমান রয়েছে অর্থনৈতি অঞ্চলসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প। এসব প্রকল্প ঘিরে এখানে বিনিয়োগ হচ্ছে কয়েক’শ কোটি টাকা। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র। 

তবে চলমান প্রকল্পের অন্যতম ‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর’ নিয়ে যেন ধোয়াশা কাটছেইনা। সম্প্রতি কয়েক দফায় প্রস্তাবিত বিমানবন্দরটির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হলেও কবে নাগাদ এর মূল কাজ শুরু হবে- তা বলতে পারছেন না কেউ। প্রশ্ন উঠেছে, কেন তাহলে এ বিমানবন্দরের জন্য কয়েক’শ কোটির অর্থ বরাদ্দ হল। আদৌ কি আলোর মুখ দেখবে খানজাহান আলী বিমানবন্দর?

অনুসন্ধানে জানা য়ায়, ২০১৫ সালে খুলনায় এই বিমানবন্দর নির্মাণসংক্রান্ত প্রকল্পটি একনেকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বরাদ্দ দেয়া হয় ৫৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। তখন বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ ২০১৮ সালের জুন মাস নাগাদ শেষ হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু ২০২১ সাল শেষ হয়ে ২২ শুরু হলেও এখনও শুরুই হয়নি বিমানবন্দরের মূল কাজ।

এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এই বিমানবন্দরটি নির্মাণে অর্থ জোগান কিভাবে হবে তা ঠিক করতেই সময় বেড়েছে; আবার একটি মহল বর্তমানে এই বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তাই দেখছেন না। প্রথমে বলা হয়েছিল, সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে বিমানবন্দরটি নির্মিত হবে। সেটি না হওয়ায় পরে রাজস্ব খাতের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেটিও বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর’ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে অতিরিক্ত হিসেবে দায়িত্বরত কর্মকর্তা প্রকৌশলী তুষার রাজবংশি বলেন, ‘আমি ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমার কাছে যে কাজ আসে সেই কাজটিই করি, যেমন- সীমানা প্রাচীরের কাজ এসেছে, সেটি তত্ত্বাবধান করেছি।’ 

কেন মূল কাজ বন্ধ রয়েছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। ২০২০ সালের জুন মাসে সম্পূর্ণ জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এরপরে এ সংক্রান্ত আর কোনঅ প্রকল্প হয়নি। তাই এই কাজের পিডিও (প্রকল্প পরিচালক)ও নাই।’

১৯৯৬ সালে চলতি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লায় মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পাশে বিমানবন্দর নির্মাণ শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়। ‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর’ নামে এটি একটি ‘শর্ট টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং বন্দর’ হিসেবে চালু করার জন্য ৪১ দশমিক ৩০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। 

২০১১ সালের ৫ মার্চ খুলনা জেলা সফরকালে ‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর’টি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দরে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিশ্রুতির চার বছর পর প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। 

১৯৯৬-২০০১ পর্বে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার প্রস্তবিত বিমানবন্দর এলাকার মাটি ভরাটের কাজ করেছিল, কিন্তু পরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সেই কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে জমির সীমানা নির্ধারণী কাঁটাতারের বেড়া ও সাইনবোর্ড ছাড়া ওই জমিতে আর কিছুই নেই।

এ প্রসঙ্গে মোংলা-রামপাল আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা এই বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হবে। শুধু মোংলা-বাগেরহাটবাসীর নয়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিমানবন্দর হবে এটি। খানজাহান আলী বিমানবন্দর প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। পিপিপির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার চেষ্টা করছে।’ 

তা না হলে পদ্মা সেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নেই দ্রুত সময়ের মধ্যে খানজাহান আলী বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি