স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ায় জেল খাটছেন তৃতীয় ব্যক্তি
প্রকাশিত : ১৯:২৮, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে যৌতুক লোভী ডিভোর্সি স্বামী ও তার পরিবাররের হাত থেকে বাঁচতে এবং গাড়ি চুরির মিথ্যা মামলা থেকে নিরপরাধ হোটেল ম্যানেজারকে মুক্তি দেয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।
শুক্রবার বেলা ২টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত এম এ মোছাব্বিরের নাতিন ও স্ত্রী এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রেজওয়ানা চৌধুরী নিরমা জানান, তিনি তার পিতার একমাত্র কন্যা। পিতার সহায় সম্পত্তির প্রতি তার সদ্য ডির্ভোস প্রাপ্ত স্বামীর প্রচুর লোভ ছিলো।
তিনি জানান, তার মা ও নিজের নামের এফডিআর ভেঙ্গে বিভিন্ন সময়ে তাকে প্রায় তিন কোটি টাকা দিয়েছেন। এখন সে আরো টাকার জন্য চাপ দেয় এবং মারধর করে। ৯৯৯- এ ফোন দিয়ে পুলিশ এনে তিনি তার হাত থেকে প্রাণে বাঁচেন। এ ঘটনায় তার ডির্ভোসী স্বামী ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার বৃ-দেবস্থান গ্রামের শফিউল্লাহ ওরফে উজ্জ্বল এর উপর মামলা করেন। বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে।
এদিকে তার এ মামলার পর তার বাবার বাড়ির পরিচিত এক ব্যাক্তি শ্রীমঙ্গল নুরফুডস এর ম্যানেজার মো: সাইফুল ইসলামকে জড়িয়ে ঢাকা ভাটারা থানায় গাড়ি চুরির মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গাড়ি তার মায়ের বাসায় রেখে যায় মামলার বাদীর ভাই তার সদ্য তালাক দেয়া স্বামী। যার সিসিটিভির ফুটেজ শ্রীমঙ্গল শহরের একাধিক জায়গায় সংরক্ষিত আছে। মামলার বাদি গাড়ির মালিকও নয়।
তাছাড়া যাকে মামলায় জড়িয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে সে এ বিষয়ে কোন কিছুই জানে না। যে সময়ে ঢাকা থেকে গাড়ি চুরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে সে সময়ে সে শ্রীমঙ্গলে নুরফুডসের ক্যাশে ম্যানেজারের দায়ত্ব পালন করছিল। যার সিসিটিভির ফুটেজেও রক্ষিত আছে। সত্যতা যাচাই না করে একজন নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আদালতের প্রতি অনুরোধ করেন এই মিথ্যা মামলা থেকে একজন নিরপরাদ মানুষকে জামিন প্রাদান করে এ ঘটনায় প্রকৃত চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে রেজয়ানা চৌধুরীর মা ফরিদা এফ এ চৌধুরী বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। এই স্বাধীন দেশের পুলিশ তদন্ত না করে কাউকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করবে এটা ভাবতেও পারিনি।
তিনি বলেন, মেয়ে ও নাতির দিকে তাকিয়ে একজন মাদকাসক্তকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছি। আমরা কি এর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারিনা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রেজওয়ানা চৌধুরীর ছেলে শেখ মোহাম্মদ সাদমান সালেহিন জিয়ন বলেন, এই গাড়িটি চড়ে তার বাবা মা সহ ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল এসেছে। বাবাই গাড়িটি তার নানুর বাসায় রেখে গেছে। তাহলে অন্য একজন গাড়িটি কিভাবে চুরি করলো, এটা মিথ্যা। এ সময় জিয়ন আরো বলে নেশা করে তার বাবা তার মাকে মারধর করে আর টাকা চায়। এটা তার ভালো লাগেনা।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার এস আই আসাদ জানান, এ ব্যাপারে রেজওয়ানা চৌধুরীর দায়েরী নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলার আসামিকে ধরতে তারা ঢাকায়ও অভিযান করে এসেছেন কিন্তু তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মামলার আসামি আগেই পালিয়ে যায়। গাড়িটির ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা ঢাকা ভাটারা থানার মামলা। ওরা আমাদের কাছে কোন তথ্য চাইলে আমরা গাড়িটির অবস্থানের বিষয়ে সত্যতা বলতে পারবো।
এ ব্যাপারে ঢাকা ভাটারা থানার এস আই হাফিজ জানান, ভাটারা থানায় একটি গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে। এ মামলায় শ্রীমঙ্গল রেজওয়ানা চৌধুরীর মায়ের বাসার সামনে থেকে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশকে নিয়ে চুরির অভিযোগকৃত গাড়িটি উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় মামলার এোহার নামীয় একজন আসামিকেও আটক করেন। তবে শিঘ্রই ন্যায় বিচার প্রাপ্তির স্বার্থে তদন্ত করে সঠিক প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এসি
আরও পড়ুন