ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পিকনিক ট্রাজেডি: ৯ শিশু শিক্ষার্থীকে স্মরণ করছে বেনাপোলবাসি

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:১৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১১:৩৮, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

দিন মাস পার হয়ে ফিরে আসে বছর। কিন্তু ফিরে আসে না হারিয়ে যাওয়া ৯ শিশু শিক্ষার্থী। আজও কান্না থামেনি হারিয়ে যাওয়া এসব শিশুর পরিবারের। পথ চেয়ে বসে আছে এই বুঝি ফিরে আসছে তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানেরা। তারা চলে গেছে না ফেরার দেশে। আর কোনদিন ফিরবেনা। ঝরে যাওয়া ফুল ফিরে পাবেনা পরিবারের সদস্যরা। তবে তাদেরকে অশ্রুতে স্মরণ করবে গোটা বেনাপোলবাসী।

এই দিনে খালি হয়, কিছু দু:খিনি মায়ের কোল। ২০১৪ সালের সেই শোকে আজও স্তব্ধ বেনাপোল। আবারো কালের পরিক্রমায় ফিরে এলো যশোরের চৌগাছার ঝাউতলা ট্রাজেডির কথা। 

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বেনাপোল ট্রাজেডির আট বছর। বেনাপোলে শোক দিবস। এই দিনে মুজিবনগর থেকে শিক্ষা সফর শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় বেনাপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ শিশু শিক্ষার্থী। আহত হয় আরো ৪৭ জন। স্বজনদের আহাজারি বন্ধুদের কান্নার রোলে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে গোটা বেনাপোল বন্দর এলাকায়। নিহত শিশু শিক্ষার্থীদের স্মরণে বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বেনাপোল পৌরসভা নির্মাণ করে স্মৃতিস্তম্ভ। স্মৃতিস্তম্ভে ‘বুকে তীর বিদ্ধ অবস্থায় উড়ছে ৯টি কবুতর। শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। আর পাশেই রক্তের স্রোতে বইয়ের বর্ণমালা মুছে যাচ্ছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘আমার বর্ণমালা তুমি ভালো থেকো’। 

শোক দিবসের ৮ম বর্ষকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে এদিন শার্শা উপজেলা, বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগ, পৌরসভা করোনার কারণে সীমিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলে জানান পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক মুকুল। সকালে শোক র‌্যালী, ৯ শিশু শিক্ষার্থীর স্মৃতি বিজড়িত ভাষ্কর্যে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া অনুষ্ঠান ও মিলাদ মাহফিল। বেনাপোলের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, পেশাজীবি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উপস্থিত থাকবেন এ কর্মসূচিতে। 

২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী বেনাপোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরে মুজিব নগরে যান। সেখান থেকে চৌগাছা হয়ে বেনাপোলে ফেরার পথে ঝাউতলা কাঁদবিলা পুকুর পাড়ে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৯ জন এবং আহত হয় আরো ৪৭ জন শিশু শিক্ষার্থীরা। ঘটনাস্থলে নিহতরা হলো, বেনাপোল পৌরসভার ছোটআঁচড়া গ্রামের সৈয়দ আলীর দুই মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী সুরাইয়া (১০) ও তার বোন তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী জেবা আক্তার (৮), ছোটআঁচড়া গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী মিথিলা (১০), রফিকুল ইসলামের মেয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী রুনা আক্তার মীম (৯), লোকমান হোসেনের ছেলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শান্ত (৯), গাজিপুর গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির হোসেন (১০) ও নামাজ গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী আঁখি (১১)। ১৩ দিন পর ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ছোটআঁচড়া গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ইকরামুল (১১)। সর্বশেষ দুর্ঘটনার ৩২ দিন পর ১৯ মার্চ ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইয়ানুর রহমান (১১)।
এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি