দুদকের মামলায় বাগেরহাট পৌর মেয়র কারাগারে
প্রকাশিত : ১০:২১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২
পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান
দুর্নীতির মামলায় বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করিমকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। দীর্ঘ শুনানী শেষে আসামিদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃরবিউল ইসলাম এই আদেশ প্রদান করেন।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার বিকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সহস্রাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে পৌর মেয়র ও সচিবকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এসময়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ছবি তুলতে গেলে বাধা দেন মেয়রের কর্মী-সমর্থকরা। ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলা ও সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তারা।
এদিকে, মেয়রকে কারাগারে প্রেরণের সংবাদে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের আদালত প্রাঙ্গনসহ একাধিক স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা। রাস্তার দুপাশে বাস রেখে এবং পলিথিনে আগুন ধরিয়ে যান চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করেন অবরোধকারীরা।
তবে, কিছু সময় পর পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তারা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে নামে দুদকের খুলনা কার্যালয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর অবৈধ নিয়োগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ।
একটি মামলায় বাগেরহাট পৌরসভায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে এক কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা আত্মসাতের দায়ে মেয়রসহ ১৮ জনকে আসামি করা করা হয়।
অন্যদিকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বাগেরহাটে আবাহনী ক্লাবের কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ এবং ডায়াবেটিক হাসপাতাল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করে এক কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান এবং পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে আসামি করা হয়।
ওই দুই মামলায় ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মেয়রকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী মেয়র বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেয়।
এই মামলায় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী নকীব সাইফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ড. একে আজাদ ফিরোজ টিপু সহ শতাধিক আইনজীবী আসামিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিলন কুমার ব্যানার্জি।
আইনজীবী ড. একে আজাদ ফিরোজ টিপু বলেন, পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান এবং পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। যেহেতু মেয়র শারীরীকভাবে অসুস্থ তার প্রয়োজনী কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জি বলেন, ‘যা ঘটেছে তাতো আপনারা দেখেছেন। এ বিষয়ে আর কিছু বলার নাই।’
এএইচ/
আরও পড়ুন