কান্না না থামায় যমজ ২ সন্তানকে হত্যার পর পুকুরে ফেলে দেন মা
প্রকাশিত : ২১:০৫, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ২১:১২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
খুলনার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামে পুকুরে দুই মাস বয়সী যমজ শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মা কানিজ ফাতেমা কনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যার দায় স্বীকার করায় শুক্রবার রাতে (১৮ ফেব্রুয়ারি) তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
এর আগে যমজ শিশু মনি ও মুক্তার বাবা মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে তেরখাদা থানায় মামলা করেন। দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক কনাকে রাতে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা অন্য দুই জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মনি ও মুক্তা বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী গ্রামের মাসুম বিল্লাহর মেয়ে। তিনি চাঁদপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঘটনার রাতে গাংনী গ্রামে ছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেরখাদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক জানান, মনি ও মুক্তা নামে কনার যমজ সন্তান। তারা বেশিরভাগ সময় কান্নাকাটি করতো। এ নিয়ে কনা বিরক্ত ছিলেন। সন্তান হওয়ার পর থেকে গত দুই মাস ১১ দিন বাবার বাড়ি কুশলা গ্রামে ছিলেন কনা। স্বামীকে ফোন করে আগামী মাসে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। মাসুম বিল্লাহ তাদেরকে আগামী মাসে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কনা জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মনি ও মুক্তা ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি শুরু করে। এ সময় তাদেরকে দুধ খাইয়ে ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করেন কনা। তারপরও তাদের কান্না না থামায় রাত আড়াইটার দিকে বাচ্চাদের মুখে থাপ্পড় মারেন। এরপর তাদের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না কনা। তাই হারানোর নাটক সাজাতে মধ্যরাদে বাচ্চাদের বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন।
এরপর ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েন কনা। রাত ৪টার দিকে উঠে হঠাৎ চিৎকার শুরু করেন। প্রতিবেশীরা তাদের বাড়িতে ছুটে আসে। তাদেরকে বাচ্চা নিখোঁজের বিষয়টি জানান কনা। এরপর সবাই মনি ও মুক্তাকে খুঁজতে থাকে। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করেন নানি শরিফা খাতুন ও মামা নুর আলম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এরপর পরিবারের প্রত্যেকের ওপর নজর রাখেন। বিকালে কনা, তার বাবা ও মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কনা অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। এরপর যমজ শিশু হত্যার কারণ পুলিশের ব্যাখ্যা করেন। পরে অপর দুই জনকে ছেড়ে দিয়ে কনাকে আটক রাখে পুলিশ।
আরকে//
আরও পড়ুন