চাকরির প্রলোভনে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ, মূলহোতা গ্রেফতার
প্রকাশিত : ২২:০১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ২২:১৩, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
যুবলীগ নেতা ফুয়াদ আল মতিন
নোয়াখালীর চাটখিলে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক সন্তানের জননীকে (২৩) ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের মামলায় প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা ফুয়াদ আল মতিনকে (৩৮) সোমবার দুপুরে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের পর নির্যাতিতাকে অচেতন অবস্থায় রাস্তার পাশে ফেলে রাখার ঘটনায় রোববার রাতে চাটখিল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়।
গ্রেফতারকৃত ফুয়াদ আল মতিন উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক এবং একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবু তোরাব গ্রামের অধ্যাপক মতিনের ছেলে।
চাটখিল সার্কেল-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম যুবলীগ নেতা ফুয়াদ আল মতিনের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা জানান, পরিবারের সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় ছিলেন। তার দুই বছরের একটি সন্তান আছে। এক বছর আগে পরিচয়ের জের ধরে পারিবারিক সমস্যা থাকায় ফুয়াদের কাছে একটি চাকরির কথা বলেন গৃহবধূ। পরবর্তীতে গৃহবধূর কাছ থেকে একটি জীবন বৃত্তান্ত জমা নেন ফুয়াদ এবং তাঁকে রোববার সকাল ১০টায় তার পাল্লা বাজারস্থ কার্যালয়ে আসতে বলেন। ফুয়াদের কথামত তিনি সিএনজিযোগে পাল্লা বাজারস্থ কার্যালয়ে আসেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ফুয়াদ একটি ইন্স্যুরেন্সে চাকরি করেন এবং ওই ইন্স্যুরেন্সের একাউন্ট সেকশনে তাকে চাকুরী দিবেন বলেও জানায়। পরে একথা-সেকথা বলে কালক্ষেপণ করেন ফুয়াদ। কিছুক্ষণ পর তাকে নাস্তা দেয়া হয়। পরে কোমল পানীয় দেয়া হয়। তাতে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশানো ছিল। তা পান করার পর তাঁর শরীর নিস্তেজ হতে থাকে। এরপর ফুয়াদ তার পাশে এসে বসে হিজাব ধরে টানা হিঁছড়ে করে ধস্তাধস্তি শুরু করলে তাতে বাধা দিলে তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে ফুয়াদ আল মতিন। এসময় তার এক সহযোগী মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন এবং কাউকে কিছু বললে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়।
নির্যাতিতা আরও বলেন, পরে তারা তাকে একটি অটোরিকশায় তুলে দিলে রিকশা চালক তাকে চাটখিল ও পাল্লা বাজারের মাঝামাঝি জায়গায় নামিয়ে দেয়। ওইস্থান থেকে এক সিএনজি চালকের সহযোগিতায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।
গৃহবধূ জানান, নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তিনি চাটখিল থানা ও হাসপাতালে যাননি। কারণ চাটখিলের রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসন তার কথায় চলে বলেও হুমকি দেন ফুয়াদ।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ উল্যাহ পাটোয়ারী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে আমি গত এক সপ্তাহ যাবৎ ঢাকায় অবস্থান করছি। তবে গত দেড় বছর আগে ওই কমিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এনএস//
আরও পড়ুন