ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বাগেরহাট পুলিশের অভিনয়ে ‘অভিশপ্ত আগস্ট’ মঞ্চস্থ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৯:১৮, ১০ মার্চ ২০২২

বাংলাদেশ পুলিশের রচনা, নির্দেশনা ও অভিনয়ে বাগেরহাটে মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক “অভিশপ্ত আগস্ট”। বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় বাগেরহাট সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বেদনার্ত ঘটনা প্রবাহকে উপজীব্য করে নির্মিত নাটকটির ৫৯তম মঞ্চায়ন করা হয়। 

বেদনাবিধুর ঘটনার নাটকটি দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে। পুলিশ সদস্যরা অভিনয়ের মাধ্যমে ১৫ আগস্টের সেই কালো রাতের করুণ কাহিনী ফুটিয়ে তুলেছেন। পুলিশ সদস্যদের নিখুঁত অভিনয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি দর্শকরা। সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার, কেএম আরিফুল হকসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নাটকটি উপভোগ করেন।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট রাতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। সেই কালরাতে বিপথগামী সামরিক অফিসারদের নারকীয় তাণ্ডব মর্মস্পর্শীভাবে তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। 

ঘটনাপ্রবাহে উঠে এসেছে খলনায়ক খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে ঘাতক চক্রের মিত্রতাও। উপস্থাপিত হয়েছে মেজর ফারুক, রশীদসহ পর্দার আড়ালে থাকা মাস্টারমাইন্ডদের দেশ দখলের নীলনকশা তৈরি এবং সে ষড়যন্ত্রে সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনাকারীদের ষড়যন্ত্রের বীজ বুনন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করণসহ নানা বিষয়।

ঘটনাপ্রবাহে দেখা মেলে, আর দশটা সাধারণ দিনের মতোই হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের কর্মব্যস্ততার চিত্র। বাদ যায়নি শিশু শেখ রাসেলের করুণ আর্তনাদ ও তাকে বাঁচাতে পরীবানুর আকুতিও। নাটকের দৃশ্যপটে উঠে এসেছে ৩২ নম্বর বাড়ির প্রতিটি মানুষের চিত্র। সেই সূত্র ধরে উঠে এসেছে কর্মচারী রমা, পরীবানু, আব্দুল থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তা সিদ্দিকুরও। নাটকে অসীম মমত্ববোধ। তুলে ধরা হয়েছে, বাড়ির মানুষদের সাধারণ জীবনযাপনের চিত্রও।

বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় বলেন, নাটকটিতে সেই দিনের ঘটনাটি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বুঝতে হলে জানতে হবে। সেই পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কাকডাকা ভোরে নৃশংসতার ঘটনাটি নতুন প্রজন্ম এই নাটকটির মাধ্যমে জানতে পারবে। 

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, পুলিশ ভাইয়েরা যে হৃদয় বিদারক নাটকটি মঞ্চস্থ করলেন, আসলে মন ছুঁয়ে গেছে। তারা চমৎকারভাবে সব বিষয়গুলো তুলে নিয়ে আসছেন। এসময় তিনি নাটকটির অভিনয় শিল্পীদের ধন্যবাদ জানান। 

বাগেরহাটে পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, নাটকটির মাধ্যমে একটি বার্তা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মকে বার্তাটি দেয়া। তারা জানে না পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ভয়াবহতা। অনেকে বইপুস্তক পড়ে জেনেছে। বাংলাদেশ পুলিশ নাটকের মাধ্যমে বার্তাটি দেশব্যাপী নতুন প্রজন্মকে জানাতে এই আয়োজন করেছে।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ সাধারণত অপরাধীদের নিয়ে কাজ করে। কিন্তু পুলিশেরও অনেক সৃজনশীল কাজ রয়েছে। দেশ প্রেম রয়েছে, রয়েছে সাধারণ মানুষের প্রতি মমত্ববোধ। যে নাটকটি প্রদর্শিত হয়েছে, এর রচনা, নির্দেশনা, আলোকসজ্জা ও অভিনয় সবই করেছে আমাদের পুলিশ সদস্যরা। 

ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ পুলিশ দেশ ও জাতির কল্যাণে বাংলাদেশ পুলিশ সৃজনশীল কাজসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গবেষণালব্ধ প্রযোজনাটির পরিকল্পনা, গবেষণা ও তথ্য সঙ্কলন করেছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।  নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ জাহিদুর রহমানের নির্দেশনায় নাটকটিতে ৩০ জন পুলিশ সদস্য অভিনয় করেছেন।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি