নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তির ২ ঘণ্টা পর যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু
প্রকাশিত : ১২:২২, ১৪ মার্চ ২০২২
নিহত যুবক সবুজ
নাটোরের একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তির দুই ঘণ্টা পর সবুজ আহমেদ (২১) নামে মাদকাসক্ত যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শহর জুড়ে চলছে শুধু নানা গুঞ্জন।
কেউ বলছেন অতিরিক্ত মাদক সেবনের জন্য, কেউ বলছেন বিষাক্ত মদ পানের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে নিকটাত্মীয়দের দাবি, রিহ্যাব সেন্টারে ভর্তির পর চিকিৎসার নামে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (১৩ মার্চ) রাতে শহরের হরিশপুর এলাকায় নাটোর রিহ্যাব সেন্টারে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে রিহ্যাব সেন্টার কর্তৃপক্ষের দাবি, অতিরিক্ত মাদক সেবন এবং সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা গেছে।
এদিকে, সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ সোহরাব আলী সম্রাট জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত সবুজ আহমেদ নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকার মরহুম মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
নাটোর সদর থানার অফিসার (ওসি) মোঃ মনছুর রহমান জানান, সবুজ নিয়মিত মাদক সেবন করতো। রোববার রাতে সে মাদক সেবন করে বাসায় ফিরে পরিবারের লোকজনের সাথে অশোভন আচরণ করতে থাকে। এ অবস্থায় তারা বিরক্ত হয়ে রাত ৯টার দিকে তাকে শহরের বড় হরিশপুর এলাকায় অবস্থিত ‘নাটোর রিহ্যাব সেন্টারে’ নিয়ে যান।
সেখানে ভর্তির পর সবুজ বমি করতে থাকেন। সেন্টারে কর্মরতদের সাথে অশোভন আচরণসহ ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে নাটোর সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন রিহ্যাব সেন্টার কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন, জানান ওসি।
খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত বা বিষাক্ত মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হতে পারে। কিংবা রিহ্যাব সেন্টারের ভুল চিকিৎসা অথবা নির্যাতনের কারণেও মৃত্যু হতে পারে। তাই দুই বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে অধিকতর তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করা হবে।
তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে এই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাচ্ছে না। এবিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে, বলেন ওসি।
এদিকে, নিহত সবুজের ভাই সজিব ও চাচাতো ভাই লিটন বলেন, ভর্তির দু’ঘণ্টা পর তার মৃত্যু রহস্যজনক। সে মাদকাসক্ত হলেও খুব খারাপ অবস্থায় ছিলনা। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করে জড়িতদের আইনের আওতায় নেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে নাটোর রিহ্যাব সেন্টারের ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বলারিপাড়া এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সবুজকে রোববার রাত সোয়া ৯টার দিকে মদ্যপ অবস্থায় রিহ্যাব সেন্টারে নিয়ে আসেন তার বন্ধুরা। সেসময় বেশ মাতাল ও খারাপ অবস্থায় ছিল সে। একই সঙ্গে মাহফুজ (২১) নামে অপর একজনও তার সাথে আসে। তিনিও মদ্যপ ও মাতাল অবস্থায় ছিলেন। তাদের অবস্থার অবনতি দেখে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ৬ মাস আগে সবুজের বড়ভাই সজিব এই নাটোর রিহ্যাব সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। একটি গোষ্ঠি এই রিহ্যাব সেন্টারের সুনাম ক্ষুন্ন করতে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে বলে মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীর হোসেন।
এএইচ/
আরও পড়ুন