ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চার’শ ঘর-বাড়ি, আহত অর্ধ-শত
প্রকাশিত : ১৮:৫৬, ১১ এপ্রিল ২০২২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩টি উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। এতে চার'শ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও ৫৫ জন আহত হয়েছে। ঝড়ে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সোমবার ভোর ৩টা ১১ মিনিটে নাসিরনগরে ঘূর্ণিঝড়ে চার'শ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টির কারণে ফসলেরও ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এতে বিভিন্ন গ্রামের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ভলাকুট ও চাতলপাড় ইউনিয়নের উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়।
এ দুটি ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভলাকুট, কান্দি, বালিখোলা, দূর্গপূড়, খাগালিয়া, কাহেতুড়া, বাঘি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পূর্ব বালিখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ধ্বসে পরায় বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিজিত রায় জানান, ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ৫৫ জন গুরুত্বর আহত হয়েছে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। একটি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এদিকে, সরাইল উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধান ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকায় রাত ৩টা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে।
উপজেলা অরুয়াইল-পাকশিমুল সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। অরুয়াইল গ্রামের নুর মাহমুদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী আখড়ার বিশালাকার গাছ পড়ে তিনটি ঘর ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। রাণীদিয়ার মাদরাসার টিনশেড ঘরের চালা উড়ে গিয়ে পাশের বাড়িতে আঘাত করেছে। দুবাজাইল গ্রামের আনিসুর রহমানের বিল্ডিংয়ের সিঁড়ির ছালাটি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছে। উপড়ে গেছে গাছপালা, ভেঙ্গে গেছে ঘরবাড়ি, ধান ও ভুট্টা গাছগুলো হেলে পড়েছে। গাছ থেকে মরিচ ঝরে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝড়ের আঘাতে অধিকাংশ ঝুপড়ি ঘর, টিনশেড ঘর, গাছপালা ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবাররা জানান, রাত ৩টায় হঠাৎ আকাশ অন্ধকার হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরেই প্রবল বেগে ঝড় শুরু হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আকরাম হোসেন বলেন, ঝড়ে নুয়ে পড়া পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে শিলা বৃষ্টিতে সামান্য ক্ষতি হয়েছে। আমরা ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা তৈরি করছি।
এদিকে বিজয়নগর উপজেলার চর-ইসলামপুরের নাজিরাবাড়ি, হরষপুর ইউনিয়নের বুল্লা, চান্দুরা ইউনিয়নের রামপুরা, ভাটি কালিসীমা, বেকিনগর, রসুলপুর, বুধন্তী, পেটুয়াজুড়ি, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার অন্তত শতাধিক ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এছাড়াও বিজয়নগর উপজেলায় ১০০ হেক্টর ধান ও ৫০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয় বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিস।
নাসিরনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক জানান, শিলাবৃষ্টিতে বিচ্ছিন্নভাবে ক্ষতি হয়েছে ১৫০ হেক্টর জমি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সার্বিক সহায়তা করা হবে।
কেআই//
আরও পড়ুন