মাটির ফিল্টারের সুখ্যাতি বাড়ছে দেশজুড়ে (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:২৪, ১৬ এপ্রিল ২০২২
খাবার পানি বিশুদ্ধ ও ঠাণ্ডা রাখতে দেশজুড়ে সুখ্যাতি ঐতিহ্যবাহী মাটির ফিল্টারের। একসময় মাটির কলস থেকে এর উৎপত্তি হলেও এখন তা বালি আর সিমেন্ট দিয়ে তৈরি হয়। ফিল্টার তৈরিতে মূলত ব্যবহার করা হয় ধানের তুষ, সিমেন্ট ও বালি।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মাধবপুর উপজেলার রায়পাড়া গ্রামের হিরা লাল রায় আয়রণমুক্ত বিশুদ্ধ পানির জন্য মাটির কলস থেকে উদ্ভাবন করেন ফিল্টার। মাটির কলসিতেই মাটির তৈরি আরও একটি অংশ বসিয়ে তাতে কার্বন লাগিয়ে দেন। প্রথমে নিজেদের ব্যবহারের জন্য করলেও পরবর্তীতে তা বাণিজ্যিকভাবে সফল হন তিনি।
হিরা লালের মৃত্যুর পর মাটির ফিল্টারের আধুনিকায়ন করেন তার ছেলে ব্রজ লাল রায়। মাটির বদলে তিনি বালু ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি শুরু করেন। প্রায় ১৫ বছর আগে ব্রজ লাল মারা গেলে তাদের পরিবার এ ব্যবসা আর ধরে রাখতে পারেনি। কারিগররা গড়ে তোলেন ফিল্টার কারখানা।
ফিল্টার ব্যবসায়ীরা জানান, “ব্যবসাটা চালিয়ে যাচ্ছি, বর্তমানে ভালই আছি। দেশের বিভিন্নস্থানে এখান থেকে ফিল্টার সরবরাহ করা হয়। সাড়ে পাঁচশ’ থেকে শুরু ১৮শ’ টাকা পর্যন্ত ফিল্টারের দাম রয়েছে।”
দিনে দিনে উপজেলায় গড়ে উঠেছে ৫০টির বেশি কারখানা। কাজ করছেন অন্তত ৫শ’ শ্রমিক।
শ্রমিকরা জানান, “যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চালাই। ফিল্টারে কাজ করে খুব আয়-উন্নতি করেছি।”
মাটির কলস পানি আয়রণমুক্ত না করায় হিরা লাল রায় এ ফিল্টারের উদ্ভাবন করেন বলে জানান তার নাতি।
উদ্ভাবক হিরা লাল রায়ের নাতি কাজল কুমার রায় বলেন, “মাটি দিয়ে একটা ডিজাইন করে এর ভেতর কার্বন দেওয়া হত। এই কার্বনটা পানি শতভাগ আয়রনমুক্ত করতো।”
জিওগ্রাফিকাল পণ্য হিসেবে এর স্বীকৃতি আদায়ে প্রচেষ্টা চালানোর কথা জানালেন বিসিক কর্মবকর্তা।
হবিগঞ্জ বিসিকের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল-আমিন ভূঁইয়া বলেন, “এই পণ্যটা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য আমরা তথ্য সংগ্রহ করবো এবং তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে আমাদের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব শীঘ্রই প্রেরণ করবে।”
পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্প আরও প্রসারিত হবে; কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে আরও বেশি মানুষের, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এএইচ/
আরও পড়ুন