ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

সঙ্গীকে বাঁচাতে গিয়ে শূকরের আক্রমণে প্রাণ দিলেন চা শ্রমিক

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২২:০৬, ২৬ এপ্রিল ২০২২

বন্য শূকর

বন্য শূকর

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বন্য শূকরের হাত থেকে সঙ্গী শ্রমিককে বাঁচাতে গিয়ে ওই শূকরে​​​​​​​র আক্রমণেই প্রাণ হারালেন চন্দন বাউরী (৪৫) নামে এক চা শ্রমিক। এ ঘটনায় নিহতের সঙ্গী লাচ্ছান মাদ্রাজী আহত হন।

মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া বন সংলগ্ন ফুলবাড়ি চা বাগানের ৩নং সেকশনে এ ঘটনা ঘটে।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শ্রীমঙ্গলের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র জানান, চা শ্রমিকের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বিকেলে তিনি ঘটনাস্থলে যান। একাধিক শ্রমিকের সাথে আলাপ করে তিনি জানতে পারেন, চা শ্রমিক চন্দন বাউরী প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার সকালেও বাগানের ৩ নম্বর সেকশনে আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছিলেন। পাশেই কাজ করছিলেন একই বাগানের শ্রমিক লাচ্ছান মাদ্রাজী (৫৫)। 

আকস্মিকভাবে বেলা ১১টার দিকে একটি বন্যশূকর লাচ্ছান মাদ্রাজীকে কামড়াতে শুরু করে। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যান পাশে থাকা চন্দন বাউরী। এসময় বন্য শূকরটি লাচ্ছানকে ছেড়ে চন্দনকে ধাওয়া করে এসে কামড়াতে শুরু করে। বন্য শূকরটি চন্দনের মাথা, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কামড়ে দেয়। এ সময় সেকশনে কাজে থাকা অন্য শ্রমিকরা এগিয়ে এসে বন্য শূকরকে তাড়িয়ে দেন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকেই উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। বেলা আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চন্দন বাউরীর মৃত্যু হয়। এদিকে আহত লাচ্ছান মাদ্রাজী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ফুলবাড়ি চা বাগানেরে পঞ্চায়েত সভাপতি মনোরঞ্জন পাল জানান, বাগানে কাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। চন্দনের ৪টি সন্তান রয়েছে। এখন পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। বন বিভাগসহ অন্যান্য দপ্তরের সহায়তা প্রয়োজন।

ঘটনার খবর পেয়ে চা বাগান ব্যবস্থাপক ও চা শ্রমকি ইউনিয়নের মনু ধলই ভ্যালীর (অঞ্চলের) সভাপতি, সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। তারা বলেন, লাউয়াছড়া বনে অনেক বন্য শূকর রয়েছে। অন্য প্রাণীও আছে, কিন্তু বনে কোনো সীমানা প্রাচীর নেই। 

তারা বলেন, বন্য প্রাণীর আক্রমণে কেউ মারা গেলে বন বিভাগ থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রয়েছে। এ বিষয়ে তারা প্রশাসন ও বন বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শ্রীমঙ্গলের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, মৃত্যু ও আহতের খবর শুনে ঘটনাস্থলে, হাসপাতালে ও তাদের বাড়িতে গিয়েছি, তাৎক্ষণিক ব্যক্তিগতভাবে কিছু সহায়তাও করেছি।

সেইসঙ্গে বন বিভাগ থেকে তাদের পরিবারকে সহযোগীতার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন বলেও জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি