হতদরিদ্র শাবনূরের সাফল্যের গল্প (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:১৫, ৩০ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ১২:১৮, ৩০ এপ্রিল ২০২২
বাবা অসুস্থ দিনমজুর। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে চালান পাঁচজনের সংসার। তিনবেলা পেটপুরে খাবার জোটেনি, লেখাপড়ার জন্য পায়নি প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা। এরপরও অদম্য মেধা আর চেষ্টা-পরিশ্রমের জোরে পেয়েছে জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ। হতদরিদ্র পরিবারের শাবনূরের এই সাফল্যের পেছনের গল্প আর জীবন সংগ্রামের বিস্তারিত উঠে এসেছে একুশের রিপোর্টে।
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার কামারকাঠি গ্রামের দিনমজুর বাবুল মোল্লার মেয়ে শাবনূর। অত্যন্ত প্রান্তিক জনপদের মেয়েটি মাইলের পর মাইল হেঁটে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সপ্তম শ্রেণি থেকেই অন্যের বাড়িতে টিউশনি করে যুগিয়েছে নিজের পড়াশোনার খরচ।
এ অবস্থায়ও নিজের ঝুলিতে যোগ করেছে একের পর এক সাফল্য। জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার ধারাবাহিকতায় কোচিং ছাড়াই এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া শাবনূর তাই সবার কাছে বিস্ময় বালিকা।
শাবনূরের মা বলেন, “ছোটকাল থেকেই যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছি, লেখাপড়া করে বড় হতে হবে তোমাকে।”
শাবনূরের বাবা বলেন, “লেখাপড়া করে ডাক্তার হলে এলাকার জনগণ, গরীব-দুঃখী সবাই তার থেকে উপকার পাবে।”
শাবনূর জানান, “পরীক্ষায় চান্স পেয়েছি কিন্তু ভর্তিটা অনিশ্চিত। আমি ভর্তি হতে পারব কিনা, স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা তা জানিনা।”
সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা জয় করে শাবনূরের সামনে এখন সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের হাতছানি। খুশির বন্যা বইছে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এলাকাবাসীর মাঝেও।
এলাকাবাসীরা জানান, “শাবনূর তার জীবনে সেকেন্ড হওয়ার কথাটা ভুলেই গিয়েছিল। শাবনূর একটা সংগ্রামী মেয়ে।”
কলেজ শিক্ষকের দাবি, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার প্রতি সদয় দৃষ্টি দিবেন।”
প্রশাসনও দাঁড়িয়েছে তার পাশে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রাথমিকভাবে ভর্তির জন্য ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন শাবনূরের পরিবারকে।
স্বরূপকাঠি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোশারেফ হোসেন বলেন, “শাবনূরের পরিবারের কাছে তার ভর্তি বাবদ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। যেটি পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষে আমি নির্বাহী কর্মকর্তা টাকাটা হস্তান্তর করেছি।”
মানবিক ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা শাবনূরের। এ সদিচ্ছা পূরণে বিত্তবান মানুষ ও সরকারের কাছে সহায়তা চান মা-বাবা।
এএইচ/
আরও পড়ুন