সমন্বিত সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব
প্রকাশিত : ২০:৪৯, ১১ মে ২০২২ | আপডেট: ২০:৫০, ১১ মে ২০২২
মাদকের থাবায় ধ্বংসের পথে তরুণ প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে। মাদক এক নীরব ঘাতক। মাদকের কারণে বেড়ে যাচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়। তরুণসমাজের হারিয়ে যাচ্ছে নৈতিক মূল্যেবোধ। এই ভয়াল মাদক তারুণ্য, মেধা, বিবেক, মনুষ্যত্বসব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন, নষ্ট হচ্ছে আস্থা-বিশ্বাস। পরিবার ও সমাজে তৈরি হচ্ছে নতুন আতঙ্ক।
এই পরিস্থিতিতে মাদকের লাগাম টানতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ নামে নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। শুধু ধরপাকড় নয়, একদম গ্রাম পর্যায়ে মাদকের চাহিদা হ্রাস ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের কাজ করবে ডিএনসি। এ কাজে সম্পৃক্ত থাকবে মসজিদের ইমাম, শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ। বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধকল্পে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ প্রণয়নে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। স্বরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয়ের সহযোগিতায় এ কর্মশালার আয়োজন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খানের সভাপতিত্বে উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ শামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ৫৯-বিজির অধিনায়ক লে. কর্ণেল আমীর হোসেন মোল্লা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুর রহমান।
এ সময় নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. শংকর কুমার কু-ু, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, জেলার ৫ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ৫ থানার ওসি, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি এব সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, মাদকাসক্তি একটি বহুমাত্রিক জটিল সমস্যা। এ ব্যাধি দূর করতে দরকার সমন্বিত কর্মপ্রয়াস। সরকারের একার পক্ষে এর নিরসন সম্ভব নয়। মাদকাসক্তি প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে মাদকদ্রব্য ও মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা। পরিবার ও সমাজজীবন থেকে মাদকদ্রব্য উৎখাত এবং মাদকাসক্তি নির্মূল করতে হলে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি দরকার মানুষের বিবেক ও মূল্যবোধের জাগরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন। সমন্বিত সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় জানিয়ে বক্তারা মাদক সমস্যার সমাধানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠন, শিক্ষক, সকল ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, পিতা-মাতা, সুশীল সমাজ, অভিভাবকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আরকে//
আরও পড়ুন