ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ আহরণ বন্ধ

মোংলা প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৯:৩৯, ১৮ মে ২০২২ | আপডেট: ১৯:৪২, ১৮ মে ২০২২

মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আগামী শুক্রবার (২০ মে) থেকে ৬৫ দিনের জন্য বঙ্গোপসাগরে সকল ধরণের মাছ আহরণ বন্ধ হচ্ছে। প্রতিবছরের ন্যায় ইতোমধ্যে সরকারিভাবে প্রচার প্রচারণা ও সভা করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মৎস্য বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসন। তবে একই সময় ভারতের জলসীমানায় মাছ ধরা বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে বাংলাদেশি জেলেদের মধ্যে। 

তাদের অভিযোগ এ সুযোগে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এদিকে জেলেদের জন্য সরকারি খাদ্য সহায়তা হিসেবে মোংলা উপজেলায় ছয় হাজার ৬৫০ জেলের মধ্যে ১১৫০ এবং শরণখোলা উপজেলার চার হাজার সমুদ্রগামী জেলেদের মধ্যে মাত্র ৩৭৪ জনের চাল বরাদ্দ এসেছে। এমন অবস্থা বাগেরহাটের সব উপজেলায়। এনিয়ে বিপাকে পড়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। 

বুধবার (১৭ মে) শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত এক সভায় জেলেদের চাহিদার তুলনায় এতো কম বরাদ্দ আসায় নিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা।

শরণখোলার সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে জেলে রয়েছে ১৪৪০ জন অথচ বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ১১০ জনের। এখন এ চাল আমি কিভাবে বিতরণ করবো। একই অবস্থা রায়েন্দা ইনিয়নে ১২০০ জেলের মধ্যে চাল এসেছে ১১০ জনের, খোন্তাকাটায় ৯০০ জেলের মধ্যে ১০৪ জন এবং ধানসাগরে ৫৮০ জনের মধ্যে মাত্র ৫০ জন জেলের চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এনিয়ে তারা এখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বলেও তারা জানান।

শরণখোলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, শরণখোলায় মোট জেলের সংখ্যা ৬৭৪৪ জন। এরমধ্যে সমুদ্রগামী জেলে হচ্ছে চার হাজার। ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের জন্য প্রতি জেলে ৮৬ কেজি করে চাল পাবেন। সে হিসেবে মাত্র ৩৭৪ জন জেলের চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে এখানে আমার কিছু করার নেই।

মোংলা উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এ জেড তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মোংলায় ৬৬৫০ জেলের মধ্যে চাল বরাদ্দ হয়েছে ১১৫০ জেলের। তবে তিন কিস্তিতে বাকি চাল বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, বঙ্গোপসাগরে আমাদের নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জনসীমানায় প্রবেশ করে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমাদের জেলেরা আর মাছ পায় না। যে কারণে গত বছর আমার ৫০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। আমার মত এই মৎস্য সম্পদের নির্ভরশীল বহু ব্যবসায়ী লোকসানে পরে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাই ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ও ভারতের একই সময় দেওয়ার দাবি তার। 

শরণখোলা উপজেলা ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের জেলেরা না খেয়ে থাকে আর ভরতীয় জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যায়। আমরা তা দেখলেও কিছু করার নেই। 

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ খুবই কম পাওয়া গেছে। তবে সব জেলেরা যাতে পায় সেজন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র দেয়া হবে।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি