ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দেশের প্রথম ৬ লেনের কালনা সেতু চালু হচ্ছে সেপ্টেম্বরে

নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৪৬, ৩১ মে ২০২২ | আপডেট: ০৮:৫১, ৩১ মে ২০২২

Ekushey Television Ltd.

মধুমতি নদীর ওপরই নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু। কয়েকদিন ধরে বিভ্রান্তিমূলক খবর ছড়ানো হয়েছে যে, পদ্মা সেতুর সঙ্গে মিল রেখে জুনে চালু হবে কালনা সেতুও। তবে জুনে নয়, কালনা সেতু সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে চালু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী।

এ তথ্য জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত সেতুর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতুটি নির্মিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা এবং পূর্বপ্রান্তে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা। কালনা সেতু চালু হলে বেনাপোল, যশোর, খুলনা, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঢাকাসহ আশেপাশের জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

এমনকি এশিয়ান হাইওয়ের আওতায় ভারতের সঙ্গে ঢাকার সরাসারি সড়ক যোগাযোগ চালু হবে। এক্ষেত্রে কালনাঘাট থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশেপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে। 

এছাড়া শিল্প শহর যশোরের নওয়াপাড়া এবং মোংলা বন্দর ও সাতক্ষীরা স্থলবন্দরের যোগাযোগ সহজ হবে।

তবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ নির্মাণ করা হলেও ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত এ ধরণের সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’র সুফল পাচ্ছে না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি অংশ। 

ভাঙ্গা থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল পর্যন্ত বর্তমানে দুই লেন সড়ক চালু আছে। এই অংশে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ সড়ক নির্মাণের বিষয়টি প্রকল্পাধীন বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী।

এদিকে, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি নড়াইল জেলা শাখার আহবায়ক খন্দকার শওকত বলেন, পদ্মা সেতুর সঙ্গে কালনা সেতুর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। এ দুটি সেতু রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। ফেরিঘাটের অপেক্ষা আর যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে না। যাত্রীসাধারণের পাশাপাশি কৃষিপণ্য বেচাকেনার ক্ষেত্রেও সহজ হবে। পাশাপাশি পদ্মা ও কালনাঘাট এলাকায় শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে। ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

নড়াইল প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতার বড় সাফল্য পদ্মা সেতু। সেই সঙ্গে কালনা সেতুও। সড়ক পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নদ-নদীর আর কোনো প্রতিবন্ধকতা রইল না।

যানবাহন চালকেরা জানান, ফেরিঘাট মানেই ভোগান্তি। পদ্মা ও কালনা সেতু চালু হলে সেই কষ্ট আর থাকবে না। তবে পদ্মা সেতুর টোলের পরিমাণ কম হলে ভালো হতো বলে মন্তব্য করেন তারা। পাশাপাশি কালনা সেতুর টোলের পরিমাণ কম হবে বলে আশা করছেন।

কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৫০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। 

উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৫০ কোটি টাকা। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি