ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

রাজশাহীর সিডিএম হাসপাতালে ভৌতিক বিলের অভিযোগ

রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:১২, ১ জুন ২০২২

রাজশাহীর বেসরকারি সিডিএম হাসপাতালে ভৌতিক বিল দিয়ে রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগি এক রোগীর ছেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা না দেয়া, সার্ভিস চার্জের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, ওষুধের অতিরিক্ত দাম নেয়া ও অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া ছাড়াও রোগিদের হয়রানীর অভিযোগ করা হয়েছে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। 

রাজশাহী নগরীর লক্ষিপুরে চৌধুরী টাওয়ারে অবস্থিত সিডিএম হাসপাতালে এর আগেও ভূল চিকিৎসায় রোগী মারা যাওয়া, স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে অযৌক্তিক পরীক্ষা করানো ও রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের একাধিক অভিযোগ উঠে। 

সর্বশেষ গত ২৫ মে এক রোগীর ছেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর শিরোইল কলোনির বাসিন্দা মমতাজ বেগম দীর্ঘদিন থেকে কিডনি ও ডায়ালাইসিস সমস্যায় ভূগছেন। হঠাৎ তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে গত ২০ মে রাত ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে সিডিএম হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

পরদিন ভর্তি ফি, বেড চার্জ, ওষুধের দাম ও সার্ভিস চার্জসহ বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে একদিনে ২১ হাজার ৫৪৬ টাকা বিল ধরিয় দেয় রোগীর ছেলে প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেনের হাতে। এসব বিল যাচাই করতে গিয়ে ধরা পড়ে অন্য তিনজন রোগীর বিলও এর সঙ্গে দেয়া হয়েছে। 

পরে বিষয়টি হাসপাতালের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলমকে অবগত করেন তিনি। পরে ৪ হাজার ৩৭৫ টাকা বাদ দিয়ে ১৭ হাজার ১৭১ টাকা করা হয়।

এছাড়াও এই বিলে কোম্পানীর খুচরা মূল্যের চেয়ে কোন কোন ওষুদের দাম দ্বিগুণও নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিওপেনাম ইনজেকশনের দাম নেয়া হয়েছে এক হাজার ৩৫০ টাকা। যার ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। আর ক্লোটিনেক্স ৫৭৫ টাকার পরিবর্তে ৬৫০ টাকা, সোডিপ ইনজেকশন গায়ে লেখা মূল্য ২৫ টাকা থাকলেও দাম নেয়া হয়েছে ১২০ টাকা। মক্সিবাক ৩১০ টাকার পরিবর্তে ৩৫০ টাকা নেয়া হয়েছে। 

অপরদিকে, রোগীর বেড প্যাকেজ রেট তিন হাজার টাকা হলেও প্রথম দিনের বেড ভাড়া ৫ হাজার ৩০০ টাকা এবং দ্বিতীয় দিনের বেড ভাড়া ৬ হাজার ৪০০ টাকা নেয়া হয়। এরপরে প্রতিদিন বেড ভাড়া ৪ হাজার টাকা করে নেয়া হয়। এছাড়াও ওই রোগীর একদিনে ডায়াবেটিসের ১০ বার পরীক্ষা দেখিয়ে এক হাজার টাকা বিল নেয়া হয়েছে। 

আমির হোসেন বলেন, “আমার মা ২০ মে ভর্তি হন। আর রিলিজ নিয়েছেন ২৫ মে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা বিল করা হয়েছে। যেখানে ওষুধের দাম অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ভর্তিসহ নানান ভৌতিক বিল ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। মোট বিলের সঙ্গে আবার ৭% সার্ভিস চার্জ আদায় করা হয়েছে।”

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক হাসন-আল-মারুফ বলেন, “সিডিএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অফিসের বিভিন্ন কাজে ব্যবস্ততা থাকায় শুনানি করা সম্ভব হয়নি। আগামী দুই একদিনের মধ্যে নোটিশ করে শুনানির ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হবে।”

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে সিডিএম হাসপাতালের যোগাযোগ করে ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলমকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোন নম্বর চাইলে তা দিতে অস্বীকার করেন হাসপাতালের টেলিফোন অপারেটর সাজিদ।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি