রহস্যজনক সাপের আতঙ্কে উজুলপুরবাসী (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:২২, ৫ জুন ২০২২
রহস্যজনক সাপ আতঙ্কে মেহেরপুরের উজুলপুর গ্রামবাসী। দশদিনে শতাধিক নারী-পুরুষকে কামড়ালেও সাপ দেখেননি কেউই।
গত ১২ মে মারা যায় গ্রামের মোরসালিন। পরিবারকে জানিয়েছিল, রাতে তাকে কোনোকিছু কামড়েছে। প্রথমে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক; তারপর হাসপাতালে নেয়া হলেও বাঁচানো যায়নি তাকে।
মোরসালিনের মা বলেন, “কেউ বলেছে সাপে কামড়েছে, কেউ বলে গ্যাস বের হয়েছে। সাপের ওঝা নিয়ে আসলাম, দেখে বললেন আমরা পারবো না তোমরা হাসপাতালে নিয়ে যাও।”
গ্রামে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ জন তাদেরকে সাপে কামড়েছে বললেও কেউ সাপ দেখতে পায়নি। তারা জানান, কামড়ে হাত-পা যন্ত্রণাসহ অবশ হয়ে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী একজন জানান, “কামড়ানোর পর হাত-পা জ্বলতে শুরু করে। শ্বাস বেড়ে যায়, হাত ঠাণ্ডা হয়ে আসছিল। মনে হচ্ছিল হাত যেন পাথরের মত ভারি হয়ে যাচ্ছে।”
এলাকাবাসীরা জানান, “দিনের পর দিন কামড়েছে, দুইজন, তিনজন এমনকি চারজনও। কবিরাজের কাছে যাওয়া হয়, তারা বলে যে জ্বীনরূপে অনেক ধরনের পোকামাকড় সেজে এসে কামড়ে চলে যায়। এখন অবস্থা হয়েছে যে, কোন খোঁচা লাগলেই সাপের আতঙ্ক। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না, বাইরে বের হতে পারছে না।”
চিকিৎসা দিতে আসা কবিরাজদের একপক্ষ রটিয়ে দিয়েছেন, এটার নাম ‘জ্বিনসাপ’। রক্ষা পেতে গ্রামে নাবালকদের মাঝে খিচুরি বিতরণ করা হচ্ছে। সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা। অবশ্য কিছু কবিরাজ বলছেন, কয়েকজন সাপেকাটা রোগী পেয়েছেন তারা।
এক কবিরাজ বলেন, “সাপে কাটা এক-আধটা পাওয়া গেছে। বাকিগুলো জ্বীনের আঁচড়।”
আরেক কবিরাজ জানান, “জ্বীন যে সাপের রূপ ধরে থাকে তা নয়। কারণ বিভিন্ন সাপ দেখে ধরেছি।”
‘জ্বিনসাপ’ বলে কিছু নেই। সুবিধাবাদীরা আতঙ্ক ছড়িয়ে ফায়দা নিতে চাচ্ছে বলে ধারণা সচেতন মানুষ ও স্বাস্থ্য বিভাগের।
মেহেরপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, “বিষধর সাপ যদি কামড়ায় তাহলে দুটি দাগ থাকবে। আর যদি অবিষধর সাপ কামড়ায় তাহলে খাবলে নিয়ে যাবে।”
মেহেরপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক নাহিদ আনদালিব বলেন, “একশ্রেণীর সুবিধাবাদী লোক এটাকে কেন্দ্র করে ব্যবসার আশ্রয় নিয়েছে।”
প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও জনজীবনে স্বস্তি ফেরানোর দাবি এলাকাবাসীর।
এএইচ
আরও পড়ুন