ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

শুকিয়ে গেছে সুপেয় পানির পুকুর, ভোগান্তিতে মোংলাবাসী

মোংলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:০৩, ১১ জুন ২০২২ | আপডেট: ২০:০৩, ১১ জুন ২০২২

লবন অধ্যুষিত মোংলা পোর্ট পৌরসভার সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। খাবারসহ নিত্য দিনের পানি নিয়ে তাদের ভোগান্তিরও শেষ নেই। এ সংকট সমাধানে গত ২০০৮ সালে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর শহরের মাছমারা এলাকায় পুকুর খনন করে কৃত্রিমভাবে পানি ধরে বাসিন্দাদের পানির চাহিদা মেটানো হয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় ২০১৬ সালে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি পুকুর খনন করা হয়। মোট ৮৩ একর জায়গার ওপর ১০ ফুট গভীরতার পুকুর খননসহ দুটি ওভারহেড ট্যাঙ্কও করা হয়। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে সুপেয় পানি সংরক্ষণের পুকুর দুটি শুকিয়ে যাওয়ায় নতুন করে বিপাকে পড়েছে মোংলাবাসী। 

শনিবার (১১ জুন) সরেজমিনে মাছমারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সুপেয় পানি সংরক্ষণের পুকুর দুটি শুকিয়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় চার ইঞ্চি গভীরতার পানি রয়েছে। তাতে ওভারহেড ট্যাঙ্কে ওঠানো সম্ভব হচ্ছে না। 

জানা গেছে, এ পুকুর দুটিতে বৃষ্টি ও নদীর পানি সংরক্ষণ করে তা রিফাইনারি (বিশুদ্ধিকরণ) করে পৌরবাসীদের সরবরাহ করা হয়। কিন্তু সরবরাহ করা সেই পানি চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়া এবং অনাবৃষ্টির কারণে পুকুর দুটি শুকিয়ে যাওয়ায় নতুন করে বিপাকে পড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এর সঙ্গে পৌর শহরের বাসিন্দাদেরও ভোগান্তি বেড়েছে। 

পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সেলিম, ২নং ওয়ার্ডের আবু বক্কর সিদ্দিক ও ৫নং ওয়ার্ডের মামুন বিল্লাহ বলেন, পৌর শহরের কোথাও মিষ্টি পানির উৎস নাই। পৌর কর্তৃপক্ষের একমাত্র সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে পানি দেওয়া হলেও তা ঠিকমত পাই না। এ কারণে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।

মোংলা পোর্ট পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহিদ বলেন, পৌরসভায় দুই লাখ বাসিন্দাদের পানির চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন ৬০ লাখ লিটার পানির চাহিদা থাকলেও ৩০ লাখ লিটার সরবরাহ করা হচ্ছে। পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় ৩০ লাখ লিটার পানির ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। 

সুপেয় পানির সংকটের কারণে পৌরবাসীর ভোগান্তি হচ্ছে স্বীকার করে পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন, বিগত সময়ে অপরিকল্পিতভাবে এই পুকুর দুটি খননের কারণে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা যাচ্ছেনা। পুকুর দুটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে পৌর বাসিন্দাদের এই দুর্দশার সৃষ্টি হয়েছে। পুকুর খননে যারা অনিয়ম করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এটি দেখভালের দায়িত্ব থাকলেও তারা ফিরেও তাকায় না। এজন্য ভোগান্তি আরও বেড়েছে। 

মেয়র বলেন, পৌর বাসিন্দাদের ভোগান্তি লাঘবে ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্ধিত একটি প্রকল্পের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। সেটি অনুমোদন হলেই এই সংকট নিরসন করে পৌরবাসীকে চাহিদা অনুযায়ী সুপেয় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 

এ প্রসঙ্গে মোংলা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহান আহম্মেদ বলেন, পানির প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে পৗর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করার পর আমাদের আর কোন দায়িত্ব নেই।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি