নোয়াখালীতে গৃহপরিচারিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা
প্রকাশিত : ০৯:২১, ১ জুলাই ২০২২
নোয়াখালীতে মাহিনুর আক্তার (২০) নামের এক গৃহপরিচারিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, তাকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাত ৯টায় নোয়াখালী পৌরসভার উত্তর ফকিরপুর এলাকার শান্তনালয় নামক বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাহিনুর আক্তার বেগমগঞ্জের ছয়ানী ইউনিয়নের তালিবপুর গ্রামের বড় মোল্লা বাড়ির মো. নুরুল হকের মেয়ে। তিনি গত এক বছর আগে ওই বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ নেন।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনাজ বেগম দায়িত্ব নিয়ে এক বছর আগে তার ভাই নাছিম উদ্দিন বাবুর বাসায় মাহিনুর আক্তারকে গৃহপরিচারিকার কাজ দেয়। এরপর থেকে মাহিনুরের ওপর নির্যাতন চালাতো বাবু ও তার স্ত্রী। বৃহস্পতিবার বিকালে বাবু ও তার পরিবারের লোকজন মাহিনুরকে মেরে মরদেহ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।
নিহতের ভাই মামুন হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মাহিনুরের বাসার মালিক নাছিম উদ্দিন বাবু মোবাইলে আমাদেরকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে আসতে বলে দ্রুত ফোন কেটে দেন। পরে আমরা হাসপাতালে গিয়ে মর্গে মাহিনুরের মরদেহ দেখতে পাই। হাসপাতালে লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি, মাহিনুরের মরদেহ হাসপাতালে রেখেই বাসার লোকজন চলে যায়।
মামুনের অভিযোগ, মাহিনুরের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাবু ও তার বাসার লোকজন মাহিনুরকে হত্যার পর ঘরের একটি কক্ষে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।
হাসপাতালের মর্গের সামনে আর্তনাদরত নিহতের মা মায়া বেগম বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের কারণে মেয়েকে ওই বাসায় কাজে দিয়েছিলাম। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত নাছিম উদ্দিন বাবু বলেন, চলাফেরা নিয়ে মাহিনুরকে আমার স্ত্রী বিভিন্ন সময় বকাঝকা করতো। এজন্য আমাদের উপর তার অনেক রাগ ছিল। উল্টাপাল্টা চললেও আমার বাচ্চা তাকে অনেক পছন্দ করতো, তাই তাকে রেখে দিয়েছিলাম। কিন্তু সে যে এমন কাজ করবে আমরা ভাবতে পারিনি।
নাছিম বাবুর দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেলে তার কক্ষ থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের বাইরে থেকে ভিতরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তাকে দেখতে পাই। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দ্রুত তাকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানান তিনি।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ মো. বখতিয়ার বলেন, মৃত অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের মরদেহ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনএস//
আরও পড়ুন