ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

অনশনরত সেই স্কুলছাত্রীর বিয়ে, দেনমোহর পাঁচ লাখ টাকা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৩:১০, ২ জুলাই ২০২২

নোয়াখালীর চাটখিলে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে প্রেমিক মেহেদি হাসান রাফির (২২) সঙ্গে অনশনরত দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রী ফাতেমা আক্তার তানিয়ার (১৬) বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার (১ জুলাই) গভীর রাতে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। এর আগে বিয়ের দাবিতে বেলা ১১টা থেকে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করে অনশন শুরু করেন ওই কিশোরী।

প্রেমিক মেহেদি হাসান রাফি মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইসমাইল হোসেন হেলালের ছেলে এবং তানিয়া মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পরানপুর এলাকার আবু তাহেরের মেয়ে ও স্থানীয় ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।

বিয়ে পড়ান পরানপুর সিদ্দিকীয়া নূরানী হাফেজিয়া এতিমখানা মাদ্রাসার ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন। 
বিয়ের অনুষ্ঠানে স্থানীয় মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাফরুল ইসলাম জাফর, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাকের হোসেন, ছেলের বাবা ইসমাইল হোসেন হেলালসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি সদস্য মো. জাফরুল ইসলাম জাফর বলেন, “এর আগেও মেয়েটি ওই বাড়িতে কয়েকবার গিয়েছিল। তাকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছিলাম। শুক্রবার সকাল থেকে সে রাফিদের বাড়িতে গিয়ে আর ফিরতে চায়নি। তাই দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে রাতে বিয়ের আয়োজন করি।”

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, “আমি ও ইউপি সদস্য জাফর মেয়ের বাড়িতে গিয়ে বিদেশে থাকা তার বাবা ও দুই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে তাদের অনুমোতি নিয়ে রাতেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছি।”

বিয়ের বিষয়ে পাত্রের বাবা ইসমাইল হোসেন হেলাল বলেন, “আমি একটি মাদ্রাসার পিয়নের চাকরি করি, আমার ছেলেটা বেকার। মেয়ের বাবা-ভাইয়েরা বিদেশে থাকে তাই প্রথমে রাজি ছিলাম না। পরে গ্রামের সবার অনুরোধে রাজি হই। বিয়েতে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করা হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক একটি নাকফুল কিনে এনে এবং একটি গলার চেইন দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করছি। মেয়ে এখন আমাদের বাড়িতে আছে। সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন।”

বিয়ে সম্পর্কে পাত্রী তানিয়া জানান, তিন বছর ধরে মেহেদি হাসান রাফির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রাফি বিয়ে করবে বলে আমাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়েও যায়। পরে বিয়েতে অমত করায় আমি অনেকবার তাদের বাড়িতে আসি। অবশেষে তাদের বাড়িতে অনশন করতে বাধ্য হয়েছি। আমরা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাত্র মেহেদি হাসান রাফি বলেন, “মুরুব্বিরা সবাই মিলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা আমরা মেনে নিয়েছি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমার পরিবারও তাকে মেনে নিয়েছে।”

এ বিষয়ে চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, বিষয়টি শুনে রাতে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে কেউ অভিযোগ দিতে রাজি না হওয়ায় আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আরএমএ/এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি