৯ ঘণ্টা পর নার্সিং ইনস্টিটিউটের চার ছাত্র উদ্ধার
প্রকাশিত : ০৮:৪৮, ২১ জুলাই ২০২২
চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের চার ছাত্রকে একটি ভবনে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ খবর পেয়ে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা পর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়া তাদের উদ্ধার করেন।
বুধবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত চার ছাত্র হলেন প্রথম বর্যের আজিজুর রহমান ও শওকত হোসেন এবং দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিকুল ইসলাম ও সাকিব হাসান।
তাদের অভিযোগ, ইনস্টিটিউটের প্রধান সহকারী রফিকুল ইসলামের নির্দেশে দপ্তরি আনসার আলী ও প্রহরী মোহাম্মদ রফিক ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্তরে অবস্থিত নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে শুধু ছাত্রীদের ভর্তির সুযোগ ছিল। দুই বছর ধরে সেখানে ছাত্রদের নার্স হিসেবে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। সেখানে ছাত্রীদের জন্য আবাসন সুবিধা থাকলেও ছাত্রদের সেই সুবিধা নেই।
ছাত্ররা ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন। কিন্তু করোনাকালে বাড়ির মালিকেরা তাদের বাসা ছেড়ে দিতে বলেন। এরপর থেকে সদর হাসপাতালের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জনের মৌখিক নির্দেশে ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের অব্যবহৃত চারতলা ভবনের একটি কক্ষে তাদের থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। সেই থেকে সাত ছাত্র ওই ভবনটিতে থাকতেন।
আরও জানা গেছে, নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রধান সহকারী রফিকুল ইসলাম বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রদেরকে ভবন ছাড়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল ১০টায় দপ্তরি আনসার আলী ও প্রহরী মোহাম্মদ রফিককে তিনি ভবনের প্রধান ফটকের কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে দিতে বলেন।
এতে ওই চার ছাত্র ভবনে আটকা পড়েন।
খবর পেয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাজহারুল ইসলাম ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান চাঁদ ঘটনাস্থলে আসেন।
এ সময় কামরুজ্জামান ওই ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার বিষয়ে রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ আলোমতি বেগমের নির্দেশে তালা ঝোলানো হয়েছে। পরে ইউএনও আলোমতি বেগমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তালা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
ইনচার্জ আলোমতি মুঠোফোনে ইউএনওকে বলেন, ‘আমি আজ (বুধবার) ছুটিতে আছি। আমার অনুপস্থিতির সুযোগে রফিকুল তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তালার চাবি প্রহরী মোহাম্মদ রফিকের কাছে আছে।’
এরপর ইউএনওর নির্দেশে সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রহরী মোহাম্মদ রফিক ভবনের তালা খুলে দেন। এরপর ওই চার ছাত্র ভবন থেকে বের হয়ে আসেন।
ইউএনও শামীম ভূঁইয়া বলেন, ‘যে বা যার নির্দেশে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে, আর যারা জড়িত তাদের কেউই কাজটি ভালো করেননি। যেহেতু ভবনটিতে কেউ থাকেন না, বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ওই ছাত্রদের সেখানে থাকার সুযোগ রাখা প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আতাউর রহমান বলেন, এ ঘটনা তদন্তে বৃহস্পতিবার আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাতেহ আকরামকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এএইচ
আরও পড়ুন