কাশ্মিরের কারাগারে ৮ বছর থেকে দেশে কক্সবাজারের ৫ যুবক
প্রকাশিত : ১০:৪৭, ১৩ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ১০:৪৮, ১৩ আগস্ট ২০২২
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের শিকার কক্সবাজারের রামুর ৫ যুবক ৮ বছর পর দেশে ফিরেছেন। ভারতের কারাগারে বন্দি জীবন শেষে স্বজনদের পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তারা।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পালস বাংলাদেশ তাদের দেশে ফিরিয়ে আনে।
৮ বছর আগে চাকরির প্রলোভনে পড়ে দালালচক্রের ফাঁদে পড়ে ভারতে পাড়ি জমান কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের উত্তর পাড়ার আলী আহমদের ছেলে শফিউল আলম, সুলতান আহমদের ছেলে আবদুল হামিদ, দক্ষিণ পাড়ার আবু তাহেরের ছেলে সোহেল রানা, পূর্ব তিতারপাড়ার মৃত রশিদ আহমদের ছেলে নুরুল আজিম ও টেকপাড়ার মৃত রশিদ আহমদের ছেলে মুহাম্মদ ইসমাঈল।
কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশ ও আইনি জটিলতায় ভারতের কারাগারে বছরের পর বছর বন্দি ছিলেন তারা। এসময়ে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারেননি। এদিকে সন্তানদের খবর না পেয়ে নির্বাক ছিলেন স্বজনরা।
খবর পেয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পালস বাংলাদেশের সহায়তায় ওই ৫ যুবক কারামুক্ত হয়ে দেশের মাটিতে ফেরেন। তবে, তাদের সঙ্গে যাওয়া মনজুর আলম নামের আরেকজন ভারতের কারাগারে অসুস্থ হয়ে প্রায় ৩ বছর আগে মারা যান।
স্বজনরা বলছেন, দীর্ঘ ৮ বছর পর সন্তানদের মুখ দেখতে পেয়ে আনন্দিত তারা।
ভারতে কারাভোগ শেষে দেশের মাটিতে পৌঁছলে স্বজনদের আবেগ আর কান্নার রোল পড়ে যায়। এসময়ে অবতারণা হয় ভিন্ন এক দৃশ্যের। তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী কিংবা স্বজনেরা।
অন্ধকার জগৎ থেকে ফেরা ওই পাঁচজন এখন নিজ ঘরে, স্বজনের কাছে।
ভারত থেকে ফেরত আসা নুরুল আজিম জানান, “দালালদের খপ্পরে পড়ে বেশি বেতনের চাকরির ফাঁদে পড়ে ভারত পাড়ি জমাই। সেখানে যাওয়ার পর দালালচক্র আমাদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশের হাতে আটক হলে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এভাবে আমরা ৫ জন দীর্ঘ ৮ বছর ভারতের কারাগারে ছিলাম। এখন দেশে আসতে পেরে খুব খুশি লাগছে।”
পালস বাংলাদেশ’র প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম কলিম বলেছেন, “বছরখানেক আগে খবর আসে রামুর ৬ জন ছেলে ভারতের কারাগারে বন্দি আছেন। পরে নিশ্চিত করা হয় দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ভারতের জম্বু কাশ্মির, হরিয়ানা কারাগারে বন্দি এ ৫ যুবক। তাদের মুক্ত করতে পরিবারের সদস্যরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। একটি টিমও ভারতে পাঠান। নানা জটিলতায় তাদেরকে কারামুক্ত করতে পারেননি। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৫ জনকে কারামুক্ত করে দেশে ফেরত আনা হয়েছে।”
এদিকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা যুবকদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান করা হয়। শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পালসের হেড অফিসে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক তরিকুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ ও উন্নয়ন) নাসিম আহমেদ, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওশের ইবনে হালিম, ক্যাম্প-২৩ ইনচার্জ, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, পালসের আবদুল হামিদ, আবুল বাশের, মাহবুবুল আলমসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এএইচ
আরও পড়ুন