সরকারি সিদ্ধান্ত ছাড়াই ঢাকা-রাঙ্গাবালী রুটে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি
প্রকাশিত : ১১:৪৮, ১৩ আগস্ট ২০২২
সরকারি কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই ঢাকা-রাঙ্গাবালী নৌরুটের লঞ্চে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, তারা ভাড়া বাড়াননি। আগে কম নিয়েছেন, এখন নির্ধারিত ভাড়াই নিচ্ছেন। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতি টিকেটে কমপক্ষে ২শ’ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, জ্বালাতি তেলের দাম বাড়ার পর গত পরশু থেকে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। ডেকে ভাড়া বাড়িয়েছে ২০০। ডাবল কেবিনে বাড়িয়েছে ৫০০-৬০০। সিঙ্গেল কেবিনে বাড়িয়েছে ২০০ টাকা।
রাঙ্গাবালী নৌপথ নির্ভর জনপদ। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ লঞ্চযোগে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ। তাই বাধ্য হয়ে ভাড়া বাড়লেও যাতায়াত করতে হবে। এই সুযোগে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাদের ইচ্ছে মত ভাড়া বাড়িয়েছে বলে লঞ্চযাত্রীদের ভাষ্য।
গত ৫ আগস্ট ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। জ্বালানি তেলের এ দাম বাড়ায় লঞ্চের ভাড়া শতভাগ বাড়িয়ে দিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে লঞ্চ মালিক সমিতি। তবে এখনও এবিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
এরআগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত বছরের ৭ নভেম্বর লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে সব লঞ্চের ৩৫ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
প্রতিদিন ঢাকা থেকে রাঙ্গাবালীর উদ্দেশ্যে একটি লঞ্চ আসে এবং রাঙ্গাবালী থেকে একটি লঞ্চ ঢাকা যায়। যাত্রীদের অভিযোগ, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর অগ্রীম এক দফা ভাড়া বাড়িয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। সরকার যখন ভাড়া বাড়াবে তখন আবার তারা ভাড়া বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন যাত্রীরা।
ঢাকার সদরঘাট থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাঙ্গাবালীর উদ্দেশ্যে এমভি জামাল-৯ নামক একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে আসে। লঞ্চটি মঙ্গলবার সকাল ৮টায় রাঙ্গাবালী পৌঁছলে যাত্রীরা জানান, আগে ডেকের ভাড়া ছিল ৪০০-৪৫০। এখন ৬০০-৬৫০ টাকা নিয়েছে। সিঙ্গেল কেবিন ছিল ১৩০০-৪০০, এখন নিচ্ছে ১৫০০। আর ডাবল কেবিন ছিল ২৪০০-৫০০। যা বেড়ে এখন ৩০০০।
ওই লঞ্চের ডাবল কেবিনের যাত্রী মাহমুদ বলেন, “তেলের দাম বাড়ার পর হঠাৎ করে লঞ্চের ভাড়া বাড়িয়েছে। এখনও তো সরকারি কোন নির্দেশনা আসেনি। তাহলে আগেভাগেই কেন ভাড়া বাড়ানো হল?”
লঞ্চের আরেক যাত্রী শুভ্রত সিকদার বলেন, “এখন ভাড়া বাড়িয়েছে। সরকার তাদের দাবি মেনে নিলে আবার ভাড়া বাড়াবে। সেক্ষেত্রে যাত্রীদের কিছুই করার থাকবে না।”
এ বিষয়ে ঢাকা-রাঙ্গাবালী রুটে চলাচল করা যাত্রীবাহী লঞ্চ জাহিদ-৮ এর ইনচার্জ শাহ আলম জানান, ‘সিঙ্গেল ১৫০০, ডাবল ৩০০০, ডেকে ৬০০ টাকা ভাড়া।’ ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কর্তৃপক্ষের অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আব্দুস সালাম ভূইয়া (আশিক) বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নিতে পারবে না। যদি বেশি নেয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এএইচ
আরও পড়ুন