বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে ভাসছে কয়রা-পাইকগাছা
প্রকাশিত : ১৪:২২, ১৬ আগস্ট ২০২২
পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে খুলনার কয়রা ও পাইকগাছায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম। এলাকাবাসী জানান, দ্রুত রিংবাঁধ মেরামত না করলে গোটা এলাকা তলিয়ে যেতে পারে।
কয়রা ও পাইকগাছার বিভিন্ন পয়েন্টের বেড়িবাঁধ রয়েছে অতি ঝুঁকিতে।
এদিকে, এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সোমবার (১৫ আগস্ট) সকাল থেকে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হলেও বিকাল পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে পুনরায় বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে খুলনার নদ-নদীগুলোর পানি। কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া, আড় পাঙ্গাশিয়া, শিবসাসহ বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার চার ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার প্রায় সব বাঁধ।
জোয়ারের পানির চাপে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙে এরই মধ্যে দশটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সহস্রাধিক মানুষ।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল বলেন, বাঁধগুলো যথাসময়ে সঠিকভাবে মেরামত না করার কারণে বারবার ভেঙে যায়। এতে এলাকার বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। স্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামত করার দাবি জানান তিনি।
ইউপি সদস্য ওসমান গনি বলেন, প্রতি বছরই বাঁধ ভেঙে যায় আর জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা হয়। স্থায়ীভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে এলাকাবাসী এমনিতেই বিপর্যস্ত। তার ওপর যদি প্রতিবছর ভাঙনের সম্মুখীন হতে হয় তাহলে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়বে আমাদের।
কয়রা সদরের প্যানেল চেয়ারম্যান এস এম লুৎফর রহমান বলেন, সুতির কোনা গেট ও তার আশপাশ এলাকায় দুপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারে পানিতে বাঁধের বিভিন্ন স্থান দিয়ে চুইয়ে ও ছোট-বড় ছিদ্র দিয়ে পানি এলাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। স্থানীয় জনগণ বিভিন্ন জায়গায় মাটি দিয়ে পানি ঢোকার পথ বন্ধ করছেন। কিন্তু আরও পানি বৃদ্ধি পেলে এই বাঁধ টিকিয়ে রাখা যাবে না।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মশিউল আবেদীন বলেন, পানি ঢোকার সংবাদ শুনে প্রথম থেকেই আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির সহায়তায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকালয়ে পানি যাচ্ছে ও বেড়িবাঁধের একটি জায়গা ভেঙে গেছে। পানি আটকানোর কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। দরকার হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এএইচ
আরও পড়ুন