ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রেমের টানে লক্ষ্মীপুরে এসে প্রাণ গেল গৃহবধূর, হত্যার পর ধর্ষণ!

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:১০, ২১ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ১২:২৭, ২১ আগস্ট ২০২২

ঘাতক পরকীয়া প্রেমিক সোহাগ হোসেন

ঘাতক পরকীয়া প্রেমিক সোহাগ হোসেন

পরকীয়া প্রেমের টানে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এসে খুন হয়েছেন লায়লা নূর মজুমদার (২৪) নামে এক গৃহবধূ। সোহাগ হেসেন (২৭) ও রফিক (২৫) নামে দুই বন্ধু মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। 

হত্যার আগে পরকীয়া প্রেমিক সোহাগের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয় ওই নারীর। এছাড়া হত্যার পর মৃতদেহের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হন আরেক হত্যাকারী রফিক।

আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া ওই নারীর পরকীয়া প্রেমিক সোহাগের জবানবন্দিতে উঠে আসে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কামাল হোসেনের কাছে ঘটনার স্বীকারোক্তি দেন সোহাগ। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। তার সহযোগী রফিকের বাড়িও একই এলাকায়। 

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, গত ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রায়পুর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চরপলোয়ান গ্রামের গনি মিয়ার মালিকানাধীন একটি সুপারি বাগানে অর্ধগলিত অজ্ঞাতনামা এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অল্প সময়ের মধ্যেই তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এছাড়া ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

ওসি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে উক্ত ঘটনার মূল হোতা মো. সোহাগ হোসেনকে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (২০ আগস্ট) আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে সে।

আসামি সোহাগ হোসেনের বর্ণনা মতে, প্রেমের টানে আসামি সোহাগের সঙ্গে ভিকটিম লায়লা নূর বাড়ি থেকে বের হয়। আসামি সোহাগের বন্ধু রফিকের প্রলোভনে সোহাগ গৃহবধূ লায়লাকে রফিকের মামার বাড়ি রায়পুরে নিয়ে আসে। রফিকের মামার বাড়িতে এসে আসামি সোহাগ ভিকটিমের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে রফিকের মামী তাদেরকে ঘর বের করে দেন। মামীর বাড়ি থেকে ফেরত আসার সময় সুপারি বাগানের মধ্যে সোহাগ ও রফিক মিলে ভিকটিম লায়লাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের সহযোগী রফিক হত্যাকাণ্ডের পরে ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। 

আসামি সোহাগ হোসেনের বর্ণনা মতে, হত্যাকাণ্ডটি গত ১৬ আগস্ট রাত ৮টার দিকে সংঘটিত হয়।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, লায়লা কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর গ্রামের আবুল কাশেম মজুমদারের মেয়ে। সে ওই এলাকার আরিফুর রহমান নামে এক দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী।

গত ১৬ আগস্ট তিনি বাবার বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে লায়লার বাবা আবুল কাশেম বাদি হয়ে রায়পুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

আবুল কাশেম জানান, প্রায় ৫/৬ বছর আগে তার মেয়ে লায়লার বিয়ে হয়। তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। তাদের কোনো সন্তান নেই। লায়লা বাবার বাড়ি এবং শ্বশুর বাড়ি উভয় জায়গাতেই বসবাস করতো। গত ১৬ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তার মেয়ে চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর বাজারের একটি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ থাকে। পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্নস্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পায়নি।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি