ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনের হাতছানী

আবুল হাসান, মোংলা থেকে

প্রকাশিত : ১৫:০৪, ২৭ আগস্ট ২০২২

দীর্ঘদিন পর ভ্রমণ পিয়াসু পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে সুন্দরবন। সৌন্দর্যে্যর লীলাভূমি সুন্দরবন যেন হাতছানী দিয়ে ডাকছে দর্শনার্থীদের। তিন মাস পর আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশ-বিদেশি পর্যটকরা যেতে পারবেন বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বনে।

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর সুন্দরবনের করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, হিরণ পয়েন্ট, দুবলা ও নীলকমলসহ সমুদ্র তীরবর্তী এবং বনাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে লঞ্চ, ট্যুরবোট, ট্রলার ও বিভিন্ন নৌযানে চরে বনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশ-বিদেশি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সুন্দরবন। একই সঙ্গে বনজ সম্পদ আহরণের জন্য পাস পারমিট নিয়ে ওইদিন থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন বনজীবীরাও।

তিনি আরও বলেন, গত ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ তিন মাস সুন্দরবনের সব নদ-নদী ও খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল বনবিভাগ। এই তিন মাস মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সব ধরনের মাছ আহরণ বন্ধের পাশাপশি সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়।

বন কর্মকর্তা বলেন, “এসময়টা বনের বন্যপ্রানীকূলের প্রজনন মৌমুম, তাই পর্যটক আনাগোনা থাকলে বন্যপ্রানীর প্রজনন ও বংশ বিস্তার করতে বাধার সৃষ্টি হতো।”

জানা যায়, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। ২০১৯ সাল থেকে এই কার্যক্রম চালু হয়। কিন্ত চলতি বছর এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস করে বন মন্ত্রণালয়। 

এই তিন মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বন্ধ করা হয় সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস-পারমিট ও নৌ-চলাচল। ফলে দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন ছিল জেলে ও পর্যটক শূন্য।

এদিকে বনের ওপর নির্ভরশীল জেলে, ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ ও বোটচালকরা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের বোটগুলোকে রংতুলী ও মেরামত করে সাজাচ্ছেন পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য। 

ট্যুর ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল বলেন, পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচন হওয়ার পর এতদিন সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। আশা করা যাচ্ছে, এখন সড়ক পথে পদ্মা সেতু পার হয়ে অসংখ্য পর্যটক ভিড় করবেন সুন্দরবনে।

সুন্দরবন করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, গত তিন মাস সুন্দরবনের পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় বন্যপ্রাণীগুলো বিকাল হলেই পর্যটক কেন্দ্রের সামনে চলে আসতো। কারণ মানুষের আনাগোনা কম তাই আসতে ভয় পেতো না। তিন মাস পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় সরকারের কিছুটা রাজস্ব কম হয়েছে, তবে তারচেয়ে বেশি উপকার হয়েছে বনের বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রানীকূলের। 

জেলে প্রবেশ নিষেধ থাকায় বনের নদী ও খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বংশ বিস্তার লাভ করেছে এবং বন্যপ্রাণীর বংশ বিস্তারও বেড়েছে। সরকারি নির্দেশনায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনের পাশপারমিট চালু হবে এবং বনের অভ্যন্তরে ও পর্যটক স্পটে ভ্রমণ পিয়াসুরা ঘুরতে আসবে সেজন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি