ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে অধির আগ্রহে চা শ্রমিকরা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:০৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

চা শ্রমিক (ফাইল ছবি)

চা শ্রমিক (ফাইল ছবি)

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলবেন। এ লক্ষ্যে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পাত্রখলা চা বাগানসহ দেশের চারটি বাগানে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন, শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনের এমপি উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন মৌলভীবাজার জেলার চা শ্রমিকরা। ভূমি অধিকার, শিক্ষা ও চাকরিতে কৌটা, তাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টি রক্ষায় একাডেমী স্থাপনসহ বেশ কিছু দাবি রয়েছে তাদের।

মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, জেলার বিভিন্ন চা বাগান থেকে দেড়হাজার চা শ্রমিককে পাত্রখলা চা বাগানের ধলই ভ্যালীক্লাব মাঠে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রক্ষায় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনের এমপি উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হৃদয় থেকেই চা শ্রমিকদের ভালোবাসেন। চা শ্রমিকদের বিগত মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরাসরি ভূমিকা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই পরিস্থিতির সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি গণভবনের বৈঠক করবেন এবং ভিডিও কনফারেন্সে চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলবেন। 

ইতিমধ্যে গণভবনে চা বাগান মালিকদের ডেকে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করে দিয়েছেন ৫০ টাকা এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সারাদেশের চা শ্রমিকদের সাথে শনিবার বিকেল ৪টায় কথা বলবেন। সে লক্ষ্যে দেশের চারটি চা বাগানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বলেন, বঙ্গবন্ধু চা শ্রমিকদের ভালোবাসতেন আর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও তাদের ভালোবাসেন। তার প্রমাণ চা বাগানের শ্রমিকদের প্রতিবছর বিশেষ বরাদ্দে ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হচ্ছে। চা বাগানের শ্রমিকদের চলাচলের জন্য অনেক রাস্তা করে দেয়া হয়েছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবাভাতা, ওএমএস-এর চালসহ সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করে দেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দে তাদের জন্য পাকা ঘর করে দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাগানে তা করে দেওয়া হয়েছে। আরও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে চা শ্রমিকদের মজুরি ছিল ২৮ টাকা। কয়েক ধাপে তা ১২০ টাকা করা হয়। এবছর তা ১৭০ টাকায় এনে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও আরও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যা বাস্তবায়িত হলে তাদের মজুরি ৪শ’ টাকার উপরে হবে।

এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রকলায় সভাস্থল পরিদর্শন করেছেন শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যাপক রফিকুর রহমান, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, সিনিয়র পুলিশ সার্কেল শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জ শহিদুল ইসলাম মুন্সি, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন প্রমুখ।

অপরদিকে, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বৈঠক করে তাদের মনের কথা বলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চা শ্রমিকরা তাদের ভূমি অধিকারসহ বিভিন্ন নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। 

প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের দাবি ভূমি অধিকার, উচ্চ শিক্ষা ও চাকরিতে কৌটা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ৪ মাস থেকে ৬ মাসে উত্তীর্ণ করা, চিকিৎসা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন ও চা শ্রমিকদের জন্য একটি বিশেষ হাসপাতাল, চা জনগোষ্ঠির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ভাষা যা সংরক্ষণে একাডেমী স্থাপন করা, সরকারি সহায়তায় চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন করে দেয়া। 

এছাড়াও মালিক পক্ষের দাবি অনুযায়ী চা শ্রমিকদের প্যাকেজ মজুরি ৪শ’ টাকার উপরে, তা তদন্ত করে মজুরির বিষয়টির স্থায়ী সমাধান করে দেয়া।

সরজমিনে দেখা যায়, বিশাল বড় প্যান্ডেল করা হয়েছে। দেড় হাজারেরও অধিক আসনের ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। মাটি কেটে ঠিক করা হয়েছে ধলই ভ্যালী মাঠে যাওয়ার রাস্তাও।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি