অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়, ফের কারাগারে ডিবির ৭ সদস্য
প্রকাশিত : ১৫:১০, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
কক্সবাজারে ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে অপহরণ করে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বহিষ্কৃত সাত সদস্যের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এ মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য ২০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ আদেশ ঘোষণা করেন। বিষয় নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী জানান, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার শহরের থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ‘ক্রসফায়ার’-এ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তার স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দেন-দরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় পরিবার।
টাকা পৌঁছে দেওয়া হলে পরদিন ভোররাতে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাচৌকির কর্মকর্তাকে জানান।
রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সেনাবাহিনীর ওই নিরাপত্তাচৌকি স্থাপন করা হয়েছিল।
মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় মাইক্রোবাসে তল্লাশি করে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করে চৌকির সেনাসদস্যরা। এ সময় ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনাসদস্যরা।
পিপি ফরিদুল আলম আরও জানান, এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদি হয়ে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজমকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার প্রায় ১০ মাস ২০১৮ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ডিবির সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ইতিমধ্যে জামিনে থাকা ডিবি পুলিশের ৭ সদস্যের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করেন বিচারক এবং মামলার রায়ের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেন।
মামলার বাদী ব্যবসায়ী আবদুল গফুর জানান, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালত মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছে। রায়ে ন্যায়বিচার পাবেন তিনি।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর ডিবির সাত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটি ডিবির সাত পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশও করে। বিভাগীয় মামলার কার্যক্রমটি এখনও চলমান রয়েছে।
এএইচ
আরও পড়ুন